Bardhaman Nurse Attack: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ! রেণুর হাত কাটতে সঙ্গী ছিল দু’জন, কবুল স্বামীর

স্ত্রীর উপরে ‘হামলায়’ দু’জনকে সে ব্যবহার করেছিল—কেতুগ্রামের রেণু খাতুনের স্বামী শের মহম্মদ তাদের এমনই জানিয়েছে বলে দাবি পূর্ব বর্ধমান পুলিশের। তার এক ‘ঘনিষ্ঠের’ মধ্যস্থতায় শুধু মোটরবাইকের তেলের খরচ পেলেই, সে ‘কাজ’ করে দিতে রাজি হয় ওই দু’জন। সরকারি নার্সের চাকরি পাওয়া রেণু যাতে তাকে ছেড়ে আর কারও সঙ্গে যেতে না পারেন, তাই ‘হামলার ছক’ কষা হয়েছিল বলেও পুলিশকে জানিয়েছে সে। যদিও বুধবার রেণু দাবি করেছেন, ‘‘আমাকে সন্দেহের কোনও কারণ ছিল না স্বামীর। ওকে ছেড়ে যাব না বহু বার বলেছিলাম। এখন নিজেকে বাঁচাতে এ সব বলছে।’’

তবে শনিবার রাতে ওই ‘হামলা’র সময়ে শের মহম্মদের সঙ্গে কত জন ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। ধৃতকে এ দিন কাটোয়া আদালতে তোলা হলে, ছ’দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে জেরা করে কত জন তার সঙ্গে ছিল, জানা হবে।’’

কাটোয়া হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার পরে, শের মহম্মদকে আদালতে তোলা হয়। কোর্ট লকআপে নির্লিপ্ত মুখে বসেছিল সে। এজলাসের পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। পুলিশ সূত্রের দাবি, জেরায় পুলিশের কাছে সে দাবি করেছে, রেণুকে বিয়ে করতে গিয়ে তার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ হয়নি। ২০২১ সালে দুর্গাপুরে চাকরি পাওয়ার পরে, রেণুর ‘বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক’ তৈরি হয়। তাই দম্পতির মধ্যে ‘অশান্তি’ বাড়তে থাকে। এর মধ্যে সরকারি নার্সের চাকরির তালিকায় নাম ওঠে রেণুর। তদন্তকারীদের দাবি, শের মহম্মদ তাঁদের কাছে দাবি করেছে, রেণু তাকে বলেছেন, ‘আমি সরকারি চাকরি পেয়ে গিয়েছি। অন্য জায়গায় চলে যাব’। এর পরেই নিজের এক ‘ঘনিষ্ঠের’ মদতে ‘হামলাকারীদের’ জোগাড় করে সে।

কেতুগ্রাম থানা সূত্রের খবর, ঘটনার রাতে কোজলসা গ্রামে দুই অচেনা যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন কয়েক জন। জিজ্ঞাসা করায় তারা জানিয়েছিল, সিরাজের (‌শের মহম্মদের বাবা) বাড়িতে এসেছে। বিদ্যুৎ নেই বলে রাস্তায় বেরিয়েছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, শের মহম্মদ তাদের জানিয়েছে, কোজলসা গ্রামের সাত-আট কিলোমিটারের মধ্যেই তার ‘হামলার সঙ্গী’-দের বাড়ি। ঘটনাচক্রে, সে যে দূরত্বের কথা বলেছে, তার মধ্যে মুর্শিদাবাদের একাংশও পড়ে। ফলে, সেখান থেকে ওই দু’জনকে সে এনেছিল কি না, তা দেখছে পুলিশ।

দুই ‘হামলাকারী’ গত শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামে ঢোকে। অভিযোগ, রাত ১১টা নাগাদ শের মহম্মদের ‘ঘনিষ্ঠের’ সহযোগিতায় পিছনের দরজা দিয়ে বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত রেণুর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে, পা চেপে ধরে তারা। পাশাপাশি, রেণুর ডান হাতের কব্জির কাছে টিন কাটার কাঁচি দিয়ে চেপে ধরে, দা দিয়ে কোপ মারা হয়।

রেণুর শ্বশুর-শাশুড়ি শেখ সিরাজ ও মেহেরনিকা বিবিকে এ দিন ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। তদন্তকারীদের অনুমান, রেণুর উপরে ‘হামলার ছক’ তাঁরা জানতেন না। দুর্গাপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেণুর দাবি, ‘‘স্বামীকে বারবার বুঝিয়েছি, ছেড়ে যাব না। কাজের জায়গায় অনেক সহকর্মী, বন্ধু হয়। তা কি দোষের? আসলে চাকরি নিয়ে সমস্যা ছিল বলে এত বড় ক্ষতি করা হয়েছে আমার। আমাকে খুন করতে চেয়েছিল ও!’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.