টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া বা ধর্মীয় কোনও অনুষ্ঠানে আর নিজের বক্তব্য রাখতে পারবেন না মৌলবাদী ধর্মপ্রচারক জ়াকির নায়েক। তাঁকে মুখ খুলতে পুরোপুরি মানা করে দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।
সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মে মদত দেওয়া ও টেলিভিশনে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে জ়াকিরকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল মালয়েশিয়া সরকারকে। কিন্তু উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে ভারতের সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল মালয়েশিয়া। সরকারি সূত্রে খবর, বর্তমানে কাশ্মীয় ও ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ বিলোপ নিয়ে উত্তেজক পরিস্থিতিতে ‘জাতীয় স্বার্থে’ ধর্মপ্রচারক জ়াকির নায়েকের উপর এই নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে।
মালয়েশিয়ার পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩ অগস্ট একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জ়াকির নায়েক বলেন, ‘‘মালয়েশিয়ার হিন্দুরা ভারতের মুসলিমদের থেকে ১০০ গুণ বেশি প্রভাবশালী।’’ এমনকি মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী চিনের অধিবাসীদের নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। দেশের প্রধানমন্ত্রী মোহাথির মহম্মদ প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজয়ায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন, জ়াকিরের মন্তব্য মুসলিম অধ্যুষিত এই দেশে জাতি বিদ্বেষের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাঁর কথায় ‘রাজনৈতিক’ ও ‘ধর্মীয়’ বৈষম্যের গন্ধ রয়েছে। তাই দেশের জাতীয় ও কূটনৈতিক স্বার্থেই জ়াকির নায়েককে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে।
২০১৬ সালে ঢাকার গুলশনে হামলাকারী জঙ্গিদের কয়েক জন জ়াকির নায়েকের প্রচারে প্রভাবিত হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই বছরই নভেম্বর মাসে ইউএপিএ এবং ফৌজদারি দণ্ডবিধির নানা ধারায় নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে এনআইএ। তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পরেই ভারত ছেড়ে মালয়েশিয়ায় পাকা আস্তানা বানিয়ে নেন নায়েক।
২০১৭ সালে জাকিরের বিরুদ্ধে ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারির আবেদন জানায় ভারত। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করে ইন্টারপোল জানিয়ে দেয় জাকিরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার প্রমাণ দিতে পারেনি দিল্লি। আইনি প্রক্রিয়াও ঠিক ভাবে অনুসরণ করা হয়নি। কাজেই জ়াকির নায়েককে ভারতের হাতে প্রত্যর্পণ করবে না মালয়েশিয়া।