খোদ পাক প্রধানমন্ত্রী শহবাজ শরিফের গ্রেফতারি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হল পাকিস্থানের তদন্তকারী সংস্থা এফআইএ। সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সুলেমান শহবাজ এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হামজা শহবাজকেও নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতে চাইছে সে দেশের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শনিবার এই মর্মে পাক আদালতে আবেদন জানায় তারা।
সদ্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা শহবাজের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ এনেছে পাকিস্তান ফেডেরাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এফআইএ। তাদের অভিযোগ, কয়েকশো কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ছেলে।
শনিবার বিশাল নিরাপত্তা নিয়ে পাকিস্তানের বিশেষ আদালতে হাজির হন পাক প্রধানমন্ত্রী এবং পঞ্জাব মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ভরা একটি রিপোর্ট আদালতে জমা দেন এফআইয়ের আইনজীবী। তিনি আদালতে আবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে যে বিশাল অঙ্কের আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে, সেই তদন্তের জন্য তাঁদের গ্রেফতারি প্রয়োজন। তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর ছেলে, কেউই তদন্তে সহযোগিতা করছেন না।
অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রীর কৌঁসুলি আমজাদ পারভেজ এর তীব্র বিরোধিতা করেন। দেশের তদন্তকারী সংস্থাকেই ব্যঙ্গ করে তিনি বলেন, ‘‘এফআইএ মানে ‘ফলস অ্যাসারশন অফ দ্য এজেন্সি’ (ভুয়ো দাবি-দাওয়ার সংস্থা)।’’ তাঁর দাবি, লহৌরের জেলে থাকার সময় বাবা ও ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল তদন্তকারী সংস্থা। শুধু জেলে থাকার সময়ই নয়, পরে এফআইএ-এর তলবে তাদের অফিসেও যান শহবাজ ও তাঁর ছেলে। প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবীর দাবি, এই আর্থিক তছরুপের মামলা ঝুলে রয়েছে প্রায় দেড় বছর। প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর ছেলের কাছ থেকে আর কোনও তথ্যই পাওয়ার নেই এফআইএ-র।
পাক প্রধানমন্ত্রী নিজে আদালতে দাবি করেন তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা। তিনি ১০ বছর ধরে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেই বেতনটুকুও কোনও দিন নেননি বলে দাবি করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলেও দাবি করেন তিনি।
দুই পক্ষের সওয়াল জবাবের পর আগামী ১১ জুন পর্যন্ত মামলা মুলতুবি রেখেছে আদালত। আপাতত অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্ত রয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলা দায়ের হয় ২০২০ সালের নভেম্বরে। বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে ২৮টি বেনামি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিপুল অর্থ রাখার অভিযোগ আনা হয়। তার আগেই, ২০১৯ সালে পাকিস্তান ছেড়ে ইংল্যান্ডে চলে যান পাক প্রধানমন্ত্রীর পুত্র।