সুকান্ত মজুমদারের অভিজ্ঞতা কম। এমন মন্তব্য করে অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। বর্তমান রাজ্য সভাপতিকে নিয়ে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির মন্তব্য শুনে তৎপর হন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। পাল্টা জবাবও দেন সুকান্ত। কিন্তু দিলীপ তাঁর বক্তব্যে অনড়। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভ আড্ডা ‘অ-জানাকথা’য় অংশ নিয়ে বললেন, ‘‘আমি কিছু ভুল বলিনি। আর এখনও বলছি সুকান্তের অভিজ্ঞতা কম। কেউ অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করতে আসে না। কাজ করতে করতেই অভিজ্ঞতা হয়।’’ এমন দাবি করার পাশাপাশি দিলীপ নিজস্ব যুক্তিও দিয়েছেন। উত্তরসূরি সুকান্তকে রক্ষা করার জন্যই সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন মন্তব্য করেছিলেন বলে দাবি করেন দিলীপ।
পুরভোটে গোটা রাজ্যে শোচনীয় ফলের পর থেকেই চাপে ছিলেন সুকান্ত। বালিগঞ্জ বিধানসভা এবং আসানসোল লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে পরাজয়ের পরে সেই চাপ নতুন করে তৈরি হয়। সেই সময়ে অনেকেই রাজ্য নেতৃত্বের সমালোচনায় সরব হন। বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সরাসরি রাজ্য নেতৃত্ব ‘অপরিণত’ বলে দাবি করেন। সেই সময়ে দিলীপও গলা মেলান বিদ্রোহীদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘সুকান্তের অভিজ্ঞতা কম, সবে দায়িত্ব পেয়েছেন। কিন্তু ওঁর জানা উচিত যাঁরা এত দিন আন্দোলন করেছেন, তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।’’ শুধু তা-ই নয়, সুকান্তকে দিলীপ এ-কথাও মনে করিয়ে দেন যে, ‘‘দলের এই পুরনো নেতাদের উপর বিশ্বাস করেই মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। তাই তাঁদের ভুলে গেলে চলবে না।’’
এই বিতর্ক অনেক দূর গড়ায়। সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও অখুশি হন। শনিবার দিলীপ বলেন, ‘‘নড্ডাজি বাংলা জানেন। তাঁকে আমি কী বলেছিলাম তার রেকর্ডং শুনিয়েছি। ওঁর স্ত্রী বাঙালি। তাই উনি বাংলা বোঝেন। নড্ডাজি শুনে সন্তুষ্ট হন। দিল্লি থেকে সুকান্তের সঙ্গেও কথা হয়। ওঁরা বুঝেছিলেন কেন আমি ওই কথা বলেছি। আমার রাজ্য সভাপতির সমালোচনা করা হচ্ছিল। তাঁকে রক্ষা করাও আমার দায়িত্ব। সেই কারণেই অভিজ্ঞতা কম বলেছিলাম।’’
দিলীপ যতটা সহজ করে বললেন, গোটা বিষয়টা অবশ্য ততটা সহজ ছিল না। দিলীপকে জবাব দিয়ে সুকান্ত সংবাদমাধ্যমেই বলেছিলেন, ‘‘শুরুতেই কারও অভিজ্ঞতা থাকে না। আমি যখন রাজ্য সভাপতি হয়েছি তখন আড়াই বছর সাংসদ থাকার অভিজ্ঞতা ছিল। আর দিলীপ ঘোষ যখন সভাপতি হন তখন ছ’মাস, এক বছরের অভিজ্ঞতা ছিল।’’ এর পরে অবশ্য দিলীপ আর কোনও মন্তব্য করেননি। শনিবার সেই প্রসঙ্গ উঠতেই দিলীপ কিছুটা নরম সুরেই উত্তর দিলেন।