মঞ্চটা ছিল বিরাট কোহলীর। গোটা শহর তাঁকে নিয়ে উদ্বেল ছিল। উন্মাদনা ছিল কোনায় কোনায়। তাঁর জন্যেই কলকাতা রাতারাতি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ভক্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কোহলীর মঞ্চে রং কেড়ে নিলেন রজত পাটীদার। মধ্যপ্রদেশের এই ব্যাটার করে গেলেন দুর্দান্ত শতরান। আরসিবি-কে পৌঁছে দিলেন বড় রানে। ৪৯ বলে শতরান করলেন তিনি।
মধ্যপ্রদেশের এই ব্যাটারকে আইপিএল নিলামে কেউ নেয়নি। আরসিবি-ও না। অথচ গত বার তাদের চারটি ম্যাচে খেলেছিলেন পাটীদার। মরসুমের শুরুর দিকে হঠাৎই চোট পেয়ে যান লুভনিথ সিসোদিয়া। তাঁর জায়গায় ২০ লাখ টাকা দিয়ে নেওয়া হয় পাটীদারকে। তবে শুরু থেকে খেলানো হয়নি তাঁকে। প্রথম দিকে ভাল খেলছিলেন অনুজ রাওয়ত। কিন্তু বেশ কিছু ম্যাচ যেতে না যেতেই ছন্দ হারান তিনি। পরে দেখে নেওয়া হয় সূয়স প্রভুদেসাইকেও। তিনিও দল পরিচালন সমিতির আস্থা অর্জন করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে মাঝের সারির ব্যাটিং লাইন-আপ শক্ত করতে পতিদারকে দেখে নেওয়া হয়। কে ভেবেছিল এলিমিনেটরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তিনি শতরান করে সব আলো একাই কেড়ে নেবেন।
রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ২৬ এপ্রিল প্রথম বার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচে ১৬ রান করেন। পরের ম্যাচেই লিগের শীর্ষে থাকা দল গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে অর্ধশতরান করে দলের আস্থা অর্জন করে নেন। এর পর আর তাঁকে বসিয়ে রাখেনি দল পরিচালন সমিতি। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে মাত্র দু’রানের জন্যে অর্ধশতরান করতে পারেননি। মাঝের সারিতে মোটামুটি ভাল জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছিলেন দলকে।
বুধবার শুরুতেই আরসিবি হারিয়েছিল ডুপ্লেসিকে। তিনে নামেন পাটীদার। উল্টো দিকে তখনও রয়েছেন কোহলী। প্রথম থেকেই আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন পাটীদার। কোহলীও এক সময় নিজে খুচরো রান নিয়ে পাটীদারকে স্ট্রাইক দিচ্ছিলেন। কোহলী ফেরার পর আরসিবি-র কোনও ব্যাটারই টিকতে পারেননি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলই হোন বা মহীপাল লোমরোর, পতিদারকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। শেষের দিকে এসে দীনেশ কার্তিকের সঙ্গ পেলেন এই ব্যাটার।
তবে তাঁর শতরানের পিছনে দু’জনকে কৃতিত্ব দিতে হবে। ১৫.৩ ওভারে পাটীদারের ক্যাচ ফেলে দেন দীপক হুডা। এর পর ১৭.৩ ওভারে ক্যাচ ফেলেন মনন ভোরা। দু’বার জীবন পেয়ে শতরান করতে ভুল করেননি তিনি।
টি -টোয়েন্টি ফরম্যাটে এর আগে কোনও দিন শতরান করেননি পাটীদার। সর্বোচ্চ ছিল ৯৬। সেটাও মধ্যপ্রদেশের হয়ে। টি-টোয়েন্টিতে গড় ৩১.০৩। স্ট্রাইক রেটও প্রায় ১৪০-এর কাছাকাছি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এবং এক দিনের ক্রিকেট নিয়মিতই খেলেন রাজ্যের হয়ে। এ বার আইপিএলেও মাতিয়ে দিলেন পাটীদার।