উত্তর ২৪ পরগনার মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কয়েরাপুর খাল সংলগ্ন এলাকায় ধসের কারণে সমস্যায় পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বেশ কিছু বাড়ির উঠানের মাটি আলগা হয়ে গিয়ে নেমেছে ধস। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের সেচ দফতর মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে এলাকার বাসিন্দাদের জল নিষ্কাশনের সুবিধার জন্য এই কায়েরাপুর খাল সংস্কার করে।
প্রত্যেক বছরই মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের জমা জলের সমস্যা ভুগতে হতো। বর্ষা হলেই দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়া মজে যাওয়া কয়েরাপুর খালের জল গ্রামাঞ্চলে ঢুকে এলাকার বাসিন্দাদের জলবন্দী করে রাখত। এলাকার মানুষকে সেই সমস্যার থেকে নিষ্কৃতি দিতেই রাজ্য সরকারের সেচ দফতরের উদ্যোগে দীর্ঘ ২০ বছর পর কয়েরাপুর খাল সংস্কার করা হয়। তবে এতদিন পর্যন্ত সব ঠিকঠাক থাকলেও বর্ষা নামতেই ওই খাল সংলগ্ন এলাকায় মাটি আলগা হয়ে ধস নামে। যার ফলে বেশ কিছু বাড়ির পাঁচিল হেলে পড়ে। ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা।
উত্তর বারাকপুর পুরসভা ও মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার জল এই কায়েরাপুর খাল দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। গত তিন দিনের বর্ষায় অতিরিক্ত জল নিষ্কাশিত হতে শুরু করে কয়েরাপুর খাল দিয়ে। যার ফলে খালের দুই পাশে ধসের পরিস্থিতি তৈরি হয়। আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা বিষয়টি নিয়ে সাংসদ অর্জুন সিংকে জানালে রবিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন তিনি। অর্জুন সিং বলেন, ‘অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খালের দুপাশে গার্ড ওয়াল তৈরি না করে মাটি কেটে সেই মাটি কাট মানি নেওয়ার লোভে বিক্রি করে দেওয়ার কারণে এই ধসের সৃষ্টি হয়েছে। সেচ দপ্তরের উচিত ছিল খালের দুই পাশে গার্ড ওয়াল দিয়ে খাল সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া। আমি বিষয়টি কেন্দ্রীয় জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নজরে আনব, যাতে এই মোহনপুর এলাকার বাসিন্দাদের জন্য কয়েরাপুর খালের গার্ড ওয়াল গড়ে দেওয়া যায়।’
এলাকাবাসীর সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মোহনপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নির্মল কর। তিনি জানান, ‘খাল যে ইঞ্জিনিয়াররা সংস্কার করেছেন, তারাই এর যথাযথ উত্তর দিতে পারবেন। তবে মাটি কাটা নিয়ে যে কাটমানির অভিযোগ তোলা হচ্ছে তার কোনও ভিত্তি নেই। ওই বিষয় নিয়ে যদি কেউ বলতে পারেন তবে সবচেয়ে ভালো অর্জুন সিংই পারবেন। কারন যে সময় খাল কাটার কাজ শুরু হয়েছিল সে সময় তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ছিলেন। সুতরাং কাটমানির অভিযোগ থাকলে তার উত্তর তিনিই ভালো দিতে পারবেন।’
মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেও এলাকাবাসীর সমস্যার কথা রাজ্য সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। অতিরিক্ত জলের নিষ্কাশনের স্রোতের কারনেই ওই খাল সংলগ্ন এলাকায় মাটি আলগা হয়ে গিয়ে ধসের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে এই সমস্যা আরো বাড়তে পারে বলে আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কবে এই সমস্যা থেকে তারা নিষ্কৃতি পাবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না তারা।