ভাষার মধ্যে বৈচিত্র্য দেশের গর্ব। কিন্তু এটা নিয়ে অনেকেই বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে। জয়পুরে বিজেপির দলীয় সম্মেলনে গিয়ে এই কথাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সম্প্রতি হিন্দিকে সরকারি ভাষা করা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যে যখন বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তখন প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
দলের দু’দিনের সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘অতীতে দেখা গিয়েছে, ভাষার ওপর ভিত্তি করে দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। বিজেপি জানে, দেশের সংস্কৃতি বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয়। বিজেপি দেশের প্রতিটি আঞ্চলিক ভাষার প্রতিই শ্রদ্ধাশীল। ভবিষ্যতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই ভাষার ভূমিকাই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।’
প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে জানান, দেশে যে জাতীয় শিক্ষা নীতি তৈরি হচ্ছে, তাতে আঞ্চলিক ভাষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ভাষাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনওরকম অশান্তি না হয়, সেজন্য দেশের মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।
গত এপ্রিল মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদীয় সরকারি ভাষা কমিটির সদস্যদের জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের যে কর্মসূচি তৈরি হয়, তার ৭০ শতাংশই হিন্দিতেই হয়। সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজির থেকে হিন্দিই বেশি গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষা ইংরেজির বিকল্প হতে পারে না। শাহের এই ধরনের মন্তব্যে দেশ জুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
বিরোধীরা সরব হয়ে ওঠেন। তাঁদের বক্তব্য, শাহ হিন্দিকে দেশের সরকারি ভাষা হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া চেষ্টা করছেন। ভারত যেখানে বহু ভাষাভাষীর দেশ, সেখানে এখানে এভাবে কোনও কিছু চাপিয়ে দেওয়া যায় না। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ জানান, ‘রাজনাথ সিং যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, তখন সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, হিন্দি হচ্ছে রাজভাষা। রাষ্ট্রীয় ভাষা নয়। আমি হিন্দিতে খুবই সাবলীল। কিন্তু আমি কখনই হিন্দিকে অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে পারি না।’