আজ আনন্দবাজারে নোবেল লরিয়েট এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ লিখেছেন ভারত সামাজিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে l জিডিপি বৃদ্ধির হার, প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ, বিদেশী মুদ্রার পরিমান, পণ্য রফতানি, কৃষি রফতানি, গোপালন, মৎসচাষ, প্রত্যক্ষ কর, পরোক্ষ কর, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের রেকর্ড লাভ এবং সর্বোপরি পরিষেবা রফতানি এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি সব ধরনের সূচকের নিরিখে সমালোচনার সব রাস্তা নির্মলা সীতারামনজি বন্ধ করার পর, বিরোধীরা বৈষম্য নিয়ে গলা তুলছিলেন গত কয়েক দিন l কিন্তু আপনি এসব বললে লোকজন বলবে, ভোডাংশুরা তো আগেই বলেছে? তাই নতুন সুচকের আমদানি l সামাজিক সংকট l উনি বলেছেন, সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা নাকি বারবার খবরে উঠে আসছে l রাজনৈতিক হিংসা চোখে পড়ে না স্যার? উনি বললেন, পরিস্থিতি সামান্য তিক্ত হলেই লগ্নি গুটিয়ে নেয় l কিন্তু স্যার, গতবছর ভারতে রেকর্ড প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ হয়েছে এবং পশ্চিমবঙ্গে সম্ভবতঃ গত এগারো বছর খুচরো ব্যাবসা ছাড়া কোথাও এই বিনিয়োগ হয় নি l কি বলবেন স্যার? যে খুচরো বাবাসায় বিদেশি বিনিয়োগের প্রতিবাদে আপনার নেত্ৰী মনমোহন সিংয়ের সরকার ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন 2013 তে, পশ্চিমবঙ্গের বিদেশী বিনিয়োগ বলতে সেই খুচরো ব্যাবসাতেই ?
অভিজিৎবাবু, আপনি যেখানেই থাকুন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের সকলের চেয়ে বেশী জানেন l সব খবর আপনি রাখেন l আমাদের জমি নীতি, প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, বিদ্যুতের দাম, জলসম্পদ বন্টনের অভাব, পরিকাঠামোহীনতা এবং রাজ্য সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার সম্পূর্ণ অভাব রাজ্যকে প্রতিদিন পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে l কিন্তু সত্যটা বলছেন না কেন? আপনি তো মার্কিন দেশের নাগরিক? আপনাকে তো কেউ মিথ্যা গাঁজার কেস বা মিথ্যা খুনের মামলাও দেবে না? তবু আপনি সত্য কথা না বলেছেন আগে, না বলছেন আজ l যে আপনি ভারত সরকারের সমালোচনা করতে ভয় পান না, সেই আপনি পশ্চিমবঙ্গ সরকার সম্পর্কে একটি কথাও কেন বলেন না? আপনার ভয় প্রমান করে সামাজিক সংকট আমাদের দেশে নেই, আছে আমাদের রাজ্যে l সত্যটা একবার বলুন না? কৌশিক সেন, অপর্ণা সেনকে তো কলকাতায় থাকতে হবে l হিন্দিও জানেনা যে মুম্বাই গিয়ে এঁরা পেট চালাবে l তাই এঁরা ভয় পায় এবং ভয় পেলে সমালোচনার মুখে পড়ে l কিন্তু আপনার তো সেই বাধ্যবাধকতা নেই l তবে কিসের সংকট?
সুদীপ্ত গুহ