Pallavi Dey Death mystery: আত্মহত্যা নয়, সাগ্নিকও খুনি নয়, পল্লবী-কাণ্ডে তৃতীয় দৃষ্টিকোণ বান্ধবী সঙ্ঘশ্রীর

আমি সিরাজের বেগম’ ধারাবাহিকে কাজ করতে গিয়েই পল্লবীর সঙ্গে আমার আলাপ। ফুরফুরে প্রাণবন্ত মেয়ে। অমলিন হাসি হুল্লোড়ে। আমাদের সাজঘর এক ছিল। তখন অনেকটা সময় ওর সঙ্গে কাটিয়েছি। আমাদের একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল। সারা ক্ষণ আড্ডা হত। পল্লবী একটা কথা খুব বলত, ‘‘যাই হয়ে যাক, লড়কে লেঙ্গে হিন্দুস্থান!’’ ও কোথাও হেরে যাওয়ার পাত্রী ছিল না। অল্প বয়সের অমন সুন্দর মেয়ে। প্রেম এসেছে। চলেও গিয়েছে ওর জীবন থেকে। কোনও দিন তা নিয়ে যে ভেঙে পড়েছে, তা নয়। বরং বলত, “একটা সম্পর্ক ভেঙেছে, আবার একটা হবে।” সেই পল্লবী সম্পর্কের জন্য আত্মহত্যা করবে? একেবারেই না। ও নিজেকে শেষ করে দেওয়ার মেয়ে নয়। এত দিন ধরে ওকে চিনি, এটা তো বুঝতেই পারি।

সাগ্নিককে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে এখন। ওর পরিবার থেকে খুনের মামলা দায়ের করে। সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত দেখলাম, পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিককে জেরা করেছে পুলিশ। সাগ্নিককে দু’বার দেখেছি পল্লবীর সঙ্গে। এক বার সব্জি বাজারে দেখা হয়েছিল। দিব্যি দু’জনে সব্জি কিনছিল। আমার সঙ্গে কথায় কথায় সাগ্নিক বলেছিল, “চলো, তোমার বাড়িতে এক দিন মাংস ভাত হয়ে যাক। পুরোদস্তুর কর্পোরেটে চাকরি করা সাগ্নিককে আমার খুব প্রাণবন্ত মনে হয়েছিল।” পরেও আর এক বার দেখা হয়। ভালই লাগত ওদের। পল্লবী জানিয়েছিল, ওরা ভাল আছে। এক সঙ্গে থাকলে ঝগড়া, মনোমালিন্য চলতেই থাকে। আমার দাম্পত্যেও এমন অনেক বার হয়েছে। সকলেরই হয়। তবে দেখলাম আগেই সাগ্নিকের বিরুদ্ধে পল্লবীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে তাঁর পরিবার। পল্লবীর বাবার দাবি, অন্য এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্কে থাকতে চেয়েই মেয়েকে খুন করেছেন সাগ্নিক। আমার মনে হয় না সাগ্নিক খুনি। আর এই যে অন্য তরুণীর প্রসঙ্গ টেনে এনে খুনের উল্লেখ, আমার মনে হয়

পল্লবীর খুব ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর প্রেমিক ছিল। পরে ওই সম্পর্ক ভেঙে যায়। পল্লবী আর সাগ্নিক এক সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করে। আর শুধু পল্লবী-সাগ্নিক নয়, ইন্ডাস্ট্রিতে এমন বহু মানুষ আছেন, যেখানে অভিনেত্রী তাঁর বান্ধবীর প্রাক্তনের সঙ্গে পরবর্তীকালে প্রেম করেছেন। সম্পর্কে আছেন। এত কিছু বললাম এটা বোঝাতে যে, সাগ্নিক অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করবে বলে পল্লবীকে খুন করবে না।

পল্লবীর হাতে কাজও ছিল। ওর কাজগুলো যে খুব একটানা চলত তা নয়। তবে কাজ ও ঠিক পেয়ে যেত। কাজ নিয়েও তা হলে পল্লবীর হতাশা তৈরি হয়নি বলেই আমার মানে হয়। তা হলে? ওর জীবনযাত্রা? যা আমাদের মতো বন্ধুরা জানত না, তেমন কিছু কি? ভাল লাগছে না…

সকাল থেকে সাজ ঘরে বসে মনের মধ্যে শুধু পল্লবী আর সাগ্নিক। কেন পল্লবীর মৃত্যু হল? সম্পত্তি, প্রেম, সম্পর্ক কোনটাই এর কারণ বলে মনে হয় না। আমি পল্লবীর বন্ধু হিসেবে এই কথাগুলো না লিখে পারলাম না। ওর চলে যাওয়ার তৃতীয় কোনও কারণ নিশ্চয় আছে। সেটাই পল্লবীর মৃত্যু ঘিরে ঘনীভূত সব রহস্যের জবাব দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.