দিল্লির আদালতে আবার বাতিল হল জামিন। ফলে আপাতত জেলেই থাকতে হবে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই)-এর প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার চিত্রা রামকৃষ্ণ এবং প্রাক্তন গ্রুপ অপারেটিং অফিসার (জিওও) আনন্দ সুব্রহ্মণ্যমকে। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, চিত্রাদের জামিনের আবেদন খারিজ করতে গিয়ে দিল্লির বিশেষ আদালতের বিচারক তুলে আনলেন বব ডিলানের গানের লাইন। যার মর্মার্থ, টাকা শুধু কথাই বলে না, তার প্রভাবের ব্যাপ্তি আরও বিস্তৃত।
বিশেষ বিচারক সঞ্জীব অগ্রবাল তাঁর ৪২ পাতার রায়ে বলেছেন, ‘প্রাথমিক ভাবে দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্ত (চিত্রা) এনএসইকে একটি ক্লাব চালানোর ঢঙে পরিচালনা করছিলেন। নোবেলজয়ী সঙ্গীতকার বব ডিলান একদা বলেছিলেন, ‘মানি ডাজন্ট টক, ইট সোয়ার্স’। ১৯৬৪-তে ‘ইটস অলরাইট মা অ্যাম ওনলি ব্লিডিং’ অ্যালবামের এই লাইটির অর্থ হল, টাকা শুধু কথাই বলে না, তার প্রভাবের ব্যাপ্তি আরও বিস্তৃত। এমনকি কখনও কখনও তা মানুষের উপর বিকৃত প্রভাবও ডেকে আনে।’
আদালত তার রায়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এনএসই-র এই ঘটনা দেশের সামগ্রিক বিনিয়োগের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে তাই দুই অভিযুক্তকে জামিনে মুক্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্তেই অটল থেকেছে আদালত।
এনএসই প্রধান থাকাকালীন মোটা টাকার আর্থিক অনিয়ম, খুশি মতো কর্মীদের পদোন্নতি ইত্যাদির অভিযোগ উঠেছে চিত্রার বিরুদ্ধে। চিত্রা দাবি করেছিলেন, তিনি এ সব করতেন হিমালয়ের এক সাধুর নির্দেশে। এমনকি স্টক এক্সচেঞ্জের গোপন তথ্যও সাধুকে জানাতেন। তদন্তে নেমে তথাকথিত ওই ‘সাধু’র সঙ্গে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের তৎকালীন প্রধানের চিঠি সামনে আনে সিবিআই। সামনে আসে ‘হিমালয়ের সাধু’র আসল পরিচয়। জানা যায়, ওই সাধুও আসলে এনএসই-র প্রাক্তন পদস্থ আধিকারিক, আনন্দ সুব্রহ্মণ্যম। গত ৬ মার্চ তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ২০১৮ সালের মে-তে দায়ের হওয়ার এফআইআরের ভিত্তিতে সম্প্রতি দুর্নীতি মামলায় চিত্রাকে গ্রেফতার করা হয়।