২ মে। আজ তৃণমূলের তৃতীয় বারের জন্য বঙ্গ জয়ের বর্ষপূর্তি। আর আজ থেকেই রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়াল পদ্ম শিবির। কলকাতার রাজপথে পা মেলালেন পদ্মের সব নেতারা। দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী… সবাই একসঙ্গে রাস্তায় নামলেন। পাশাপাশি হাঁটলেন। সাম্প্রতিক কালে বিজেপির অন্দরে ‘দিলীপ ঘোষ বনাম সুকান্ত মজুমদার’ একটি দ্বন্দ্বের বাতাবরণের কথা বলা হচ্ছিল শাসক দলের তরফে, সেই তত্ত্ব যে সর্বৈব মিথ্যা, তা প্রমাণ করার একটা তাগিদ যেন দেখা গেল বিজেপির এই মিছিলে। অন্তত এমনই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।
সোমবার কলকাতায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সংকল্প মহামিছিলের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। ২০২১ সালের আজকের দিনেই জয়ী হয়ে সরকার গড়েছিল মমতার দল। তবে বিজেপি নেতৃত্ব এই দিনটিকে ‘ভোট পরবর্তী হিংসার বর্ষপূর্তি’ হিসেবেই দেখছে। সুবোধ মল্লিক স্ক্যোয়ার থেকে শুরু হয় মিছিল। শেষ হয় রানি রাসমণি রোডে এসে শেষ হয় মিছিল। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সুর চড়াতে ১৫ দিন ধরে ম্যারাথন কর্মসূচি রয়েছে বঙ্গ বিজেপির। আগামিকাল দুপুর ১ টা থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অনশন সত্যাগ্রহ কর্মসূচিতে বসবে বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসাতে নিহতদের পরিবারের জন্য অর্থ সংগ্রহ করবেন দলের বিধায়ক ও সাংসদরা। এরপর ৪ মে – ৬ মে রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অমিত শাহর বঙ্গ সফরের পর ৭ মে শহিদ সম্পর্ক অভিযান রয়েছে বিজেপির। ওই সময়ে ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন বিজেপি নেতারা। এছাড়াও আরও বেশ কিছু কর্মসূচি রয়েছে বঙ্গের পদ্ম নেতারা।
রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, দলের অন্দরে বার বার করে একটি অভিযোগ উঠছিল, বিজেপি কোনও আন্দোলন করছে না। রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব ঘরে বসে রয়েছে, কর্মীদের পাশে দাঁড়ায় না। আজকের মিছিল সেই বার্তার একটি বিপরীত বার্তাই তুলে ধরল। রাজ্যে যে বিজেপি আছে এবং নিজেদের বিরোধী দলের দায়িত্ব যথার্থভাবে পালনের চেষ্টা করছে – এই বার্তাটাই যেন বার বার করে উঠে এল বিজেপির সোমবারের এই মিছিল থেকে।
মিছিল শেষে রানি রাসমণির মঞ্চ থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “উত্তরবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসাকে সামনে রেখে আমাদের সপ্তাহ ব্যাপী কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখবেন অমিত শাহ। মালদা থেকে আলিপুরদুয়ারের লাখ লাখ কর্মী সেখানে সমবেত হবেন। ৮ মে নন্দীগ্রামে পালিত হবে স্বৈরাচারী শাসকের পরাজয়ের বর্ষপূর্তি। ওই দিনে নন্দীগ্রামে ১৫ হাজার মানুষ পাঁচ কিলোমিটার হাঁটবেন বলে স্থির করেছেন। মাথায় তিলক লাগিয়ে, হাতে শাঁখ নিয়ে স্বৈরাচারী শাসকের পরাজয়ের বর্ষপূর্তি পালন করা হবে।”
রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বাংলায় শাহী সফরের আগেই দলের এককাট্টা মনোভাবকে তুলে ধরতেই এক কর্মসূচি। বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ জানিয়েছেন, “তৃণমূলের গুন্ডারা মারছে, পুলিশ সার্কাসের জোকারের মতো দেখছে। এভাবেই পুরোটা চলছে। এই জায়গা থেকেই আমরা সংকল্প নিচ্ছি, বিভিন্ন বিরোধীরা এবং নিরপেক্ষ মানুষ ও সংখ্যালঘুরাও একজোট হচ্ছেন।”
বিজেপির মিছিলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি রাজ্যের শাসক দল।
Black2ndMayAtBengal