গত কাল ১৪ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস ছিল পাকিস্তানের। তার আগে এ মাসের গোড়াতেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা করেছিলেন, তাঁদের স্বাধীনতা দিবস থেকে ইসলামাবাদ হবে প্লাস্টিক মুক্ত। ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ, প্লাস্টিক ব্যাগ উৎপাদন থেকে তার ব্যবহার সবই ১৪ অগস্ট থেকে নিষিদ্ধ হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করলেন না। তবে বৃহস্পতিবার লালকেল্লা থেকে দেশের উদ্দেশে বক্তৃতায় বললেন, পরিবেশ সুন্দর করতে দেশের মানুষ যেন স্বেচ্ছায় এ বার সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। এ বছর মহাত্মা গান্ধীর সার্ধ শতবর্ষ উদযাপন করছে দেশ। তাই ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন থেকেই সেই অভিযান শুরু হোক।
কেন্দ্রে ক্ষমতা পত্তন করে লালকেল্লা থেকে তাঁর প্রথম বক্তৃতায় স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই স্বচ্ছতা অভিযান কতটা বাস্তবে সফল হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু তাকে পাশে রেখেই স্বচ্ছতা অভিযানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, শুধু প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করা নয়, যে যেখানে প্লাস্টিক ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখবেন তা তুলে ডাস্টবিনে ফেলুন।
অনেকে বলেন, এত বড় জনসংখ্যার দেশের কোনও কিছুই স্বেচ্ছা অভিযান দিয়ে হয় না। কঠোর আইন প্রনয়ণ বা শাস্তির বিধান প্রয়োজন। ইমরান যেমন করেছেন,- প্লাস্টিক ব্যাগের উৎপাদন বা বিক্রি করলে ব্যবসায়ীদের ৫০ হাজার টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ধার্য করার কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, কোনও ব্যক্তি প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করতে গিয়ে ধরা পড়লে তাঁর পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হবে।
বলে রাখা ভাল, ইসালামাবাদ অপূর্ব এক শহর। কিন্তু পাক প্রশাসনই বলছে, শহরের নিকাশী ব্যবস্থা স্রেফ প্লাস্টিকের কারণেই এখন সংকটাপন্ন। ভারতের ছোট বড় সব শহরের অবস্থাও এর ভিন্ন নয়। তা সে কলকাতা হোক বা মুম্বই।
তবে প্রধানমন্ত্রী হয়তো বুঝেছেন, ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে চাপিয়ে দেওয়ার শাসন নীতি হিতে বিপরীত ঘটাতে পারে। কোনও কিছু নিষিদ্ধ করলে তা লুকিয়ে ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ে বই কমে না। তাই প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করাকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করার ডাক দেন এ দিন।
তিনি বলেন, দোকানদাররা যেন এখন থেকে দোকানে একটি হোর্ডিং লাগিয়ে দেন। তাতে যেন লেখেন, প্লাস্টিকের ব্যাগ এখানে পাওয়া যায় না। নিজের কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে আসুন। বা জিনিস বিক্রির সময় যেন দোকান থেকে কাপড়ের ব্যাগেই সামগ্রী দেওয়া হয়। দীপাবলীতে পার্বনে মানুষ যেন কাপড়ের ব্যাগে করে একে অপরকে উপহার দেন। তাতে এক প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ হবে, দুই চট ও কাপড়ের শিল্পের উন্নতি হবে।
এখানেই থামেননি প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের স্টার্ট আপ সংস্থাগুলোকেও বলছি,- প্লাস্টিকের পরিবেশ অনুকূল পুনর্ব্যবহার বা রিসাইকেল কী ভাবে করা যায়, তা থেকে পরিবেশ অনুকূল কিছু তৈরি করা যায় কিনা তা ভাবুন। ভারতকে প্লাস্টিক মুক্ত করতেই হবে।