ইডেন হস্টেলের সেক্যুলারগণ

ব্রিটিশ আমলে কলকাতায় যে কয়েকটা ছাত্রাবাস তৈরি হয়েছিল তার মধ্যে ছিল বেকার হস্টেল আর ইডেন হিন্দু হস্টেল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারভাঙা বিল্ডিংয়ের ঠিক পিছনে, প্রেসিডেন্সি কলেজের পাশের গলির একপ্রান্তে।  সেক্যুলারিজমের ঝুলি নিয়ে কমিউনিস্ট আন্দোলন করে বহুদিনই ইডেন হিন্দু হোস্টেল মুসলিম ছাত্রদের জন্যও উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন হল সেখানে  বোর্ডাররা থাকে, খায়, পড়াশুনো করে।কিন্তু বেকার হস্টেল? না, ওটা কিন্তু সব সম্প্রদায়ের জন্য নয়। ওখানে শুধু ওরা থাকবে। কারণ তারা সেকুলার ভারত রাষ্ট্রের জামাই।সম্প্রতি সাংসদ সুগত বসু ‘হিন্দু হস্টেল’ থেকে ‘হিন্দু’ শব্দঢি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন অনেক দিন হল । এর পক্ষে কিছু যুক্তিও
দিয়েছিলেন । একটা সময়ে আন্দোলন হল। কেন একটা হস্টেলের নাম হবে “হিন্দু হস্টেল”? সত্যি তো, হওয়ার কথা নয়। বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি থাকা উচিত নয়, আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটিও থাকা উচিত নয়, ইতিহাস যাই বলুক না কেন। শেষ পর্যন্ত ইতিহাস বাদ দিয়ে ওই হস্টেলের নাম হল “ইডেন হস্টেল”। হিন্দু নাম-টা বাদ পড়ল। পড়ারই কথা।
              দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হয়ে।পাকিস্তান নামক মুসলিমদের জন্য নির্ধারিত দেশ সৃষ্টি হল।ভারত বাকি অংশ তাহলে তো অমুসলিমদের জন্যই হওয়ার  কথা! পাকিস্তানে কেবলমাত্র আরবদের অধিকার, আর শুধু ভারতে মানুষ ও আরবের সমান অধিকার চাই! কলকাতার বুকেই তাই আজ একটা হোস্টেলে ভারত, আরেকটা হোস্টেলে পাকিস্তান।ইসলামিয়া হাসপাতাল পুনরায় চালু হল।ডাক্তারদের তালিকায় অমুসলিম চোখে পড়ল না।তা হবে না’ই বা কেন।মুসলিমরা একটি আলাদা জাতি-একথা তাদের পূর্ববর্তী নেতারা বলে গিয়েছেন অমুসলিম মুসলিম মেয়েদের স্পর্শ করে চিকিৎসা করাবে,এটি হতে পারে না।আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চালু হল মুসলমানদের শিক্ষা প্রসারের নিমিত্ত বামপন্থীরা হিন্দু হস্টেল সম্পর্কে বলেছিল ‘হিন্দু হস্টেল’ মানে হিন্দুদের হস্টেল হতে পারে না।মুসলিম হস্টেল সম্পর্কে এইমত কথা বামপন্থীরা কখনও বলেছে বলে জানা যায় না। এই কলকাতায় মুসলিম শিক্ষায়তন থেকে হিন্দু শিক্ষককে মানসিক নির্যাতন করে তাড়ানো হলেও বামপন্থীরা চুপ থাকে।
                                 এবার সেই হিন্দু হোস্টেলেই চাঁদা তুলে ইফতারে গোরু খাওয়া হবে। কলকাতার সেকুলার বাবুরা ভাইজানদের গোরু খাবার টাকা দেবেন। আমি বলছিলাম  বেকার হস্টেলে সরস্বতীপুজোর কথা ।ইফতার পার্টি করতে পারলে সরস্বতী পূজো করা যেতেই পারে ; অনেকে বলছেন করতে যেও না , করা যাবে না ,যদিও কারণটা বলার অপেক্ষা রাখে না। শিক্ষাঙ্গন ধর্মীয় আবেগ মুক্ত রাখা শিক্ষিত তথাকথিত উদার বামপন্থী বুদ্ধিজীবীদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ,বিপ্লব বা আন্দোলনের নামে বিদ্যালয় অচলাবস্থার শিক্ষা তারা এদের থেকেই পাই।

              -সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.