‘ক্লাস টপারদের’ লড়াইয়ে জিতে আইপিএলের লিগ তালিকার শীর্ষে চলে গেল গুজরাট টাইটানস। এবার আইপিএলে প্রথম দল হিসেবে আট পয়েন্টে পৌঁছে গেল গুজরাটের নয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি। তারপর অবশ্য পাঁচটি দল ছয় পয়েন্টে আছে। নেট রানরেটের খেলায় আপাতত লিগ তালিকায় দুই নম্বরে আছে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)।
বৃহস্পতিবার রাজস্থান রয়্যালসকে ৩৭ রানে হারিয়ে দিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়ারা। সেই হারের ফলে শীর্ষস্থান খুইয়েছে রাজস্থান। পাঁচ ম্যাচে ছয় পয়েন্ট-সহ তিনে নেমে গিয়েছেন সঞ্জু স্যামসনরা। অন্যদিকে, সমসংখ্যক ম্যাচ আট পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে গুজরাট। হার্দিকদের পিছনে ছয় পয়েন্টে লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে। পাঁচ ম্যাচ খেলে রাজস্থান-সহ পাঁচটি দলের ঝুলিতে ছয় পয়েন্ট আছে। নিজেদের পরবর্তী ম্যাচ জিতলে পাঁচ ম্যাচের পর দিল্লি ক্যাপিটালস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ঝুলিতেও ছয় পয়েন্ট থাকবে। অর্থাৎ সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ছয় পয়েন্টে থাকতে পারে মোট সাতটি দল।
আইপিএলের পয়েন্ট তালিকা (IPL 2022 Points Table)
দল | ম্যাচ | জয় | হার | নেট রানরেট | পয়েন্ট |
গুজরাট টাইটানস | ৫ | ৪ | ১ | +০.৪৫০ | ৮ |
কলকাতা নাইট রাইডার্স | ৫ | ৩ | ২ | +০.৪৪৬ | ৬ |
রাজস্থান রয়্যালস | ৫ | ৩ | ২ | +০.৩৮৯ | ৬ |
পঞ্জাব কিংস | ৫ | ৩ | ২ | +০.২৩৯ | ৬ |
লখনউ সুপার জায়েন্টস | ৫ | ৩ | ২ | +০.১৭৪ | ৬ |
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর | ৫ | ৩ | ২ | +০.০০৬ | ৬ |
দিল্লি ক্যাপিটালস | ৪ | ২ | ২ | +০.৪৭৬ | ৪ |
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ | ৪ | ২ | ২ | -০.৫০১ | ৪ |
চেন্নাই সুপার কিংস | ৫ | ১ | ৪ | -০.৭৪৫ | ২ |
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স | ৫ | ০ | ৫ | -১.০৭২ | ০ |
RR vs GT ম্যাচ কেমন হল?
বৃহস্পতিবার টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন।চোটের জন্য শেষমুহূর্তে ট্রেন্ট বোল্ট ছিটকে গেলেও ভালো শুরু করেন রাজস্থানের বোলাররা। ১৫ রানে দু’উইকেট পড়ে যায় গুজরাটের। কিন্তু সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি রাজস্থান। বরং ক্রমশ আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন হার্দিক।
শুভমন গিল আউট হয়ে গেলেও নিজের ছন্দ ধরে রাখেন গুজরাটের অধিনায়ক। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কিছুটা ধরে খেললেও বৃহস্পতিবার রাজস্থানের বোলারদের রেয়াত করেননি। তাঁকে যোগ্যসংগত করেন অভিনব মনোহর (২৮ বলে ৪৩ রান) এবং ডেভিড মিলার (১৪ বলে অপরাজিত ৩১ রান)। হার্দিক নিজে ৫২ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৯২ রান তোলে গুজরাট।
রান তাড়া করতে নেমে বিধ্বংসী শুরু করেন জস বাটলার। এতটাই বিধ্বংসী ছন্দে ছিলেন যে দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে যখন দেবদূত পাডিক্কাল আউট হন, তখন রাজস্থানের স্কোর ছিল এক উইকেটে ২৮ রান। তাতে একটি মাত্র বল খেলেন পাডিক্কাল। তারপর রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে পাঠায় রাজস্থান। সেই চাল খুব একটা ব্যর্থ হয়নি। এক রান করে নিয়ে বাটলারকে স্ট্রাইক দিতে থাকেন অশ্বিন। বাকি কাজটা বাটলার করতে থাকেন। সেই জুটি ভাঙেন লকি। সাত রান পরেই দুর্ধর্ষ স্লোয়ার বলে বাটলারকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) প্রাক্তন তারকা। নিজের আগের বলের থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার কম গতিবেগে বলটা করেন। বাটলার স্রেফ বুঝতেই পারেননি। তখন রাজস্থানের স্কোর ছিল ছ’ওভারে তিন উইকেটে ৬৩ রান।
সেই পরিস্থিতিতে জয়ের জন্য সঞ্জু এবং রাসি ভ্যান ডার দাসেনের দিকে তাকিয়ে ছিল রাজস্থান। কিন্তু হার্দিকের দুর্ধর্ষ থ্রোয়ে রান আউট হয়ে যান সঞ্জু। এমন থ্রো করেন হার্দিক যে স্টাম্পই ভেঙে যায়। সেখান থেকে ম্যাচে ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকে রাজস্থান। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ন’উইকেটে ১৫৫ রানের বেশি তুলতে পারেননি সঞ্জুরা।
ম্যাচের সেরা
ব্যাটে ৫২ বলে অপরাজিত ৮৭ রান, ২.৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে এক উইকেট এবং দুর্ধর্ষ রান আউটের সুবাদে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন হার্দিক। তবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন লকি। যিনি চার ওভারে ২৩ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। ভালো বল করেন রশিদ খানও। কোনও উইকেট না পেলেও চার ওভারে মাত্র ২৪ রান দেন।