মঙ্গলবার আইপিএলের ম্যাচে টসে জিতে চেন্নাই সুপার কিংসকে ব্যাট করতে পাঠায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। ৭ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে তখন ৩৭ রান চেন্নাইয়ের। বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল সিএসকে। সেই সময়ে ক্রিজে আসেন শিবম দুবে। এর পর থেকেই শুরু হয় রবিন উত্থাপ্পা-শিবম তাণ্ডব। একেবারে ঝড়ের গতিতে রান তুলতে থাকেন তাঁরা। মাত্র ৭৩ বলে ১৬৫ রানের পার্টনারশিপ গড়ে এই জুটি। যা তৃতীয় উইকেটে বা তার নীচে সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপ।
৫০ বলে ৮৮ রান করে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে বিরাট কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন উত্থাপ্পা। কিন্তু লড়াই চালিয়ে যান শিবম দুবে। ৪৬ বলে ৯৫ করে অপরাজিত থাকেন তিনি। মাত্র ৫ রানের জন্য শতরান হয়নি তাঁর। তাঁর ইনিংসটি ৫টি চার এবং ৮টি ছয় দিয়ে সাজানো।
উত্থাপ্পা এবং শিবমের দাপটেই ২০ ওভারে চেন্নাই ৪ উইকেটে ২১৬ রানের বড় ইনিংস গড়ে। যা এ বার আইপিএলে কোনও দলের করা সর্বোচ্চ রান। দুরন্ত ইনিংস খেলার পর শিবম নিঃসন্দেহে উচ্ছ্বসিত। তিনি তাঁর এই পারফরম্যান্সের জন্য দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের, বিশেষ করে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে কৃতিত্ব দিয়েছেন।
ম্যাচ শেষে শিবম দুবে বলেছেন, ‘আমরা প্রথম জয় পেতে মরিয়া ছিলাম। এবং সেই ম্যাচে আমি অবদান রাখতে পেরে খুশি। আমি আমার বেসিকের উপর ফোকাস করেছি। আমি সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং মাহি ভাইও আমাকে সাহায্য করেছেন। তিনি বলেছিলেন, তোমার স্কিলের উপর আরও মাজাঘষা করতে হবে। যত্ন নিতে হবে। আমি ব্যাটে-বলের টাইমিং আরও ভালো করতে চেয়েছিলাম। এবং ক্রিজে থেকে নিজের ভারসাম্য ধরে রাখতে চেয়েছিলাম।’
যুবরাজ সিং শিবমের রোল মডেল। তিনি বলেছেন, ‘যুবি পা সব সময়ে একজন বাঁ-হাতি খেলোয়াড়ের রোল মডেল। অনেকেই আমাকে বলেছেন যে, আমি ওর মতো ব্যাট করি। পরিস্থিতি এবং অধিনায়ক ও কোচ আমাকে যে ভাবে বলবেন, আমি যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে প্রস্তুত।’
জবাবে ব্যাট করতে নেমেই বড় ধাক্কা খায় ব্যাঙ্গালোর। ৫০ রানের মধ্যেই দলের চার মহারথী সাজঘরে ফিরে যান। মাত্র ৮ রান করে আউট হন ফ্যাফ। তিনে বিরাট কোহলি ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩ বল খেলে ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এর পর অনুজ রাওয়াত ১২ রান করে আউট হন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ঝড় তোলার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। ১১ বলে ২৬ করে রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হন তিনি।
৪ উইকেট হারিয়েও অবশ্য হাল ছাড়েনি ব্যাঙ্গালোর। শাহবাজ আহমেদ এবং সুয়াশ প্রভুদেশাই দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন। অভিষেক ম্যাচে দুরন্ত ফিল্ডিং করে আগেই নজর কেড়েছিলেন সুয়াশ। এর পর দলের খারাপ সময়ে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১৮ বলে ৩৪ করেন তিনি। তবে মহেশ থিকসানা তাঁকে বোল্ড করেন। এর পর দীনেশ কার্তিক নামলে শাহবাজ তাঁর সঙ্গে জুটি বাঁধেন। কিন্তু ২৭ বলে ৪১ করে থিকসানার বলে বোল্ড হন শাহবাজ। এর পর চেন্নাইয়ের জয় যেন সময়ের অপেক্ষা ছিল। তবে দীনেশ কার্তিক কিন্তু চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পাশে কাউকে পাননি। ১৪ বলে ৩৪ করে ডোয়েন ব্র্যাভোর বলে জাদেজার হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন কার্তিক। সেই সঙ্গে আরসিবি-র ক্ষীণ আশাটুকুও শেষ হয়ে যায়। নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানে শেষ হয়ে যায় ব্যাঙ্গালোরের ইনিংস।
ব্যাট হাতে কিছু করতে না পারলেও রবীন্দ্র জাদেজা এ দিন বল হাতে ৩ উইকেট তুলে নেন। ৪ উইকেট নেন মহেশ থিকসানা। এ ছাড়া মুকেশ চৌধুরী এবং ডোয়েন ব্র্যাভো ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। লড়াই করেও ২৩ রানে হারতে হল আরসিবি-কে।