কপালে টিপ পরিহিত হিন্দু নারীদের পতিতা ও কুকুরের সঙ্গে তুলনা করে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করেছেন বাংলাদেশের বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ শাহ আলম মিয়া।
রাজধানী ঢাকার ফার্মগেটে টিপ পরায় এক পুলিশ কনস্টেবল একজন হিন্দু শিক্ষিকাকে হেনস্তা ও হত্যার চেষ্টার সমগ্র বাংলাদেশে যখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে ঠিক তখনই আগুনে ঘি ঢেলেছেন বরিশালের এক বিএনপি নেতা। এছাড়াও, কপালে টিপ পরিয়ে কুকুরের আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে নারী অবমাননার নিকৃষ্ট উদাহরণ দিয়েছেন বিএনপি নেতা শাহ আলম।
কিন্তু মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশে রহমতের ফেরেশতারা চরকের একপাশে ভর করে থাকায় চরক ঘোরানো যাচ্ছিল না। তখন শয়তান নমরুদকে কিছু নগ্ন পতিতা নারী এনে চরকের সামনে বসিয়ে দেওয়ার কুবুদ্ধি প্রদান করলো। কারণ এমন অবস্থায় ফেরেশতারা থাকতে পারবে না। তাই করা হলো এবং ফেরেশতারা চলে গেলো। এরপর ইব্রাহীম (আ.) কে আগুনে নিক্ষেপ করা সম্ভব হলো। পরবর্তীতে ওই মেয়েগুলোকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হলো। তাদের কপালে তীলক পরানো হলো যেটা এখন আমাদের কাছে টিপ নামে পরিচিত।
তিনি একথাও বলেছেন, যেসব মুসলিম নারীরা টিপ পরে তারা এই ঘটনা না জেনে পরে। জেনেও যদি কেউ পরে তবে সেটা দুর্ভাগ্য। হিন্দু নারীরা টিপ পরে এবং এটি তাদের ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ। পতিতার পরিচয় বোঝাতে যে টিপ ব্যবহার করা হত, তা আজ মুসলমানদের মধ্যেও ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। মুসলিম মা-বোনেরা, এই সত্য জানার পরেও কি কপালে টিপ পরবে? সুতরাং এই অবমাননাকর চিহ্নটি মুসলিম মা-বোনরা এড়িয়ে চলায় ভালো।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে শনিবার সকালে। এক বেসরকারি কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের লেকচারার লতা সমাদ্দারের হেনস্থাকে ঘিরে ঘটনার শুরু। লতা সমাদ্দার লিখেছেন, কলেজে যাওয়ার পথে পুলিশের পোশাক পরা লম্বা দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তি তাকে দেখে বলে ওঠে ‘টিপ পরছোস কেন’। তারপরই অশ্লীল ভাষায় গালি দিতে শুরু করে। একটি বাইকে সে লোলুপ দৃষ্টি নিয়ে বসে ছিল। তাঁর অভিযোগ, এরপর পায়ের পাতার উপর দিয়েই বাইক চালিয়ে চলে গিয়েছিল ওই ব্যক্তি। এই বিষয়ে ঢাকার শের-ই-বাংলা নগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বাজে কথা শুনতে হয়েছে তাকে। কিন্তু একজন পুলিশের কাছে এই অভব্য আচরণ তিনি একদমই আশা করেননি।
খবর ছড়াতেই রবিবার ঢাকার রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বলেছে, স্বাধীনতার ৫২ বছর পর স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রে এই ঘটনা উদ্বেগজনক। লতা সমাদ্দারের এই ঘটনাকে ধর্মান্ধ ও নারী স্বাধীনতা বিরোধীদের নিরবচ্ছিন্ন ও এক গভীর ষড়যন্ত্র বলেই দাবি করছেন। পাশাপাশি দেশে অসহিষ্ণুতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
বাংলাদেশ সংসদে এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ তথা অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাও।তিনি মহিলাদের টিপ পরার বিষয়ে সওয়াল করে বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানে বা কোনও আইনে মহিলাদের টিপ পরার বিষয়ে কিছু লেখা নেই। এই ঘটনাটিকে তিনি ‘ইভ টিজিং’ বলেছেন। যদিও লতা সমাদ্দার বলেছেন, এই ঘটনা ওই পুলিশ কর্মীর মৌলবাদী এবং সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তির পরিচয়।