মজে যাওয়া সরস্বতী নদীর সংস্কার নিয়ে কমিটি গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েও বেশ কিছু সন্দেহ প্রকাশ করেছেন দুই বরিষ্ঠ পরিবেশকর্মী।পরিবেশ আকাদেমির সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং সম্পাদক শংকর কুশারী শনিবার বলেছেন,বিগত প্রায় ২০ বছর ধরে দক্ষিণবঙ্গের পরিবেশকর্মীরা মজে যাওয়া সরস্বতী নদীর সংস্কার নিয়ে আবেদন আন্দোলন করে আসছেন।
সম্প্রতি পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের একটি নিস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সরস্বতী নদীর সংস্কার নিয়ে কমিটি গঠিত হয়েছে। আমরা খুশি হলেও আশঙ্কিতও। তিনি বলেছেন, আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে মনে হচ্ছে, এ দেশে কমিটি গঠন হলেও অনেকসময়ই মূল সমস্যাকে ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হয়। গঙ্গা দূষণ কমিটি গঠন হলেও দুর্ভাগ্যের বিষয় সেই কমিটি যে যে প্রস্তাব দিয়েছিল তার প্রায় কোনও কিছুই গৃহীত হয়নি বা সেই সব প্রস্তাবের ভিত্তিতে কোনও কাজও হয়নি।
তিনি বলেছেন, পূর্ব কলকাতার জলাভূমির সমস্যা নিয়ে গঠিত কমিটির তার প্রস্তাবগুলি নিয়েও একই রকমের করুণ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এইজন্যই সরস্বতী নদী নিয়ে গঠিত কমিটি প্রকৃতপক্ষে কতখানি কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারবে সেই নিয়ে একটা আশঙ্কা থেকেই যায় সরস্বতী নদী দক্ষিণবঙ্গের দুটি জেলা হুগলী এবং হাওড়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
বেশ কিছুদিন আগে সরস্বতী নদীর হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে নিয়ে কিছু কিছু জায়গায় খননকার্য শুরু হয়েছিল। যদিও সেসব কাজ এখন বন্ধ। যেসব জায়গায় খননের কাজ করা হয়েছিল সেখানে নতুন করে আবর্জনা ফেলে বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা যাত্রাপথ জুড়েই নদীটি আবর্জনা ফেলার জায়গায় রূপান্তরিত হয়েছে। বেআইনি বসতবাড়ি দোকানঘর ইত্যাদি তো সঙ্গে রয়েছেই।
অথচ একসময় সরস্বতী নদীর উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছিল বহু জনপদ। তাই আজ প্রচন্ড সম্ভাবনাময় এই নদীটির ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি সহনীয় নয়। আমরা আশা করছি গঠিত কমিটি সমস্ত সমস্যা দূরীকরণের সকল উপায় বাতলে সরকারের সামনে পেশ করবে এবং সরকারও সেই প্রস্তাবগুলি কার্যকর করার জন্য সকলপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
@বঙ্গদেশ