নেপালে রামায়ণ ও শ্রীরামকে জনপ্রিয় করে তোলেন নেপালী ‘আদিকবি’ ভানুভক্ত আচার্য (১৮১৪ — ১৮৬৮)। এতটাই আকর্ষণ যে ভানুভক্তের রামায়ণ পাঠ করার আগ্রহে বহু নেপালী নিরক্ষরতা পরিত্যাগ করে বর্ণ পরিচয় ও পঠন-পাঠনের দৌলতে সাক্ষরতার দিকে এগিয়ে যায়। এই রামায়ণকে কেন্দ্র করেই নেপালী ভাষা গঠনমূলক পর্যায়ে পৌঁছে বিশ্বে স্থায়ী একটি ভাষার মর্যাদা লাভ করে। ভানুভক্ত এক নেপালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটোবেলা থেকে ঠাকুরদাদার কাছেই তাঁর প্রারম্ভিক পড়াশোনা শুরু, সংস্কৃত শেখা। এরপর তিনি উচ্চতর সংস্কৃত ও সংস্কৃতির পাঠ নিতে আসেন ভারতের বেনারস। তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত নেপালী রামায়ণ সম্পর্কে মানুষ জানতে পারেন নি। ১৮৮৭ সালে ভানুভক্ত রচিত রামায়ণের পাণ্ডুলিপি ছাপানোর জন্য মোতিরাম ভট্ট বেনারস আনেন, সাংস্কৃতিক বিশ্ব তখনই জানতে পারেন তাঁর অবদান। নেপালী ক্যালেন্ডারের ২৯ শে আষাঢ় বা ইংরেজি ১৩ ই জুলাই তাঁর জন্মদিন। সাড়ম্বরে এই দিনটি পালিত হয় নেপালে এবং নেপালী-ভাষা অধ্যুষিত দার্জিলিং, কালিম্পং সহ ভারতের নানান জায়গায়। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন, দার্জিলিং-এর ম্যালে বসানো হয়েছে আদিকবি ভানুভক্ত আচার্যের পূর্ণাবয়ব মূর্তি, আপনিও দেখেছেন সে মূর্তি, ছবিও তুলেছেন। নেপাল তাঁর স্মরণে দু’টি ডাকটিকিট প্রকাশ করেছিল, এক্ষণে তা পরিবেশিত হল। জয় ভানুভক্তের জয়।
কল্যাণ চক্রবর্তী।