হাওড়ার সাঁতরাগাছির কাছাকাছি অবস্থিত রামরাজাতলা। এই জায়গার নামের ইতিহাসের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন পৌরাণিক রাম। রামনবমী উপলক্ষ্যে, জায়গার নাম রামরাজাতলা হওয়ার কারণ নিয়ে আলোচনার জন্য তথ্য সংকলন করেছেন শব্দকর্মী প্রীতম দাশগুপ্ত।

বহু বছর আগে বরেন্দ্রভূমি থেকে এসে শ্রী চন্দ্রশেখর সান্যাল সাঁতরাগাছিতে বসবাস শুরু করেন। এঁদেরই গৃহদেবতা শ্রী রামচন্দ্র। জমিদারি ও চৌধুরী খেতাব পাওয়ার পর এই বংশের জমিদার অযোধ্যারাম চৌধুরী সাড়ম্বরে রামচন্দ্রের পূজা আরম্ভ করেন, প্রায় ২৫০-৩০০ বছর আগে। এখন এটা বারোয়ারি পূজার রূপ নিয়েছে। শ্রী রামচন্দ্রকে কেন্দ্র করেই অঞ্চলের নাম হয়–রামরাজাতলা।

প্রতি বছর এখনও দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন এই পুজো দেখতে। এই পুজো আরম্ভ হয় চৈত্রমাসের রামনবমীর দিন, এবং শেষ হয় শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার, সেদিন পালিত হয় ‘রামবিজয়া’, শ্রী রামের বিসর্জনের দিন (শ্রাবণ মাস মলমাস হলে আশ্বিনে বিসর্জন হয়)। টানা চার মাস ধরে এই পুজো চলে। বিশেষত রামনবমীর দিন এখানে দর্শনার্থীদের ঢল চোখে পড়ার মতো। এই পুজোয় রাম-সীতার ২৩ ফুট লম্বা যুগল মূর্তি ছাড়াও থাকে আরও ২৪টা মূর্তি, যার মধ্যে দেবী সরস্বতী, ব্রহ্মা, মহাদেব, হনুমান বিরাজমান রয়েছেন। এই পুজোর আরেকটা উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে রামের গোঁফ দেখতে পাওয়া যায়, যা ভারতের অন্য কোনো রামের মূর্তিতে দেখতে পাওয়া যায় না।
তথসূত্র- হাওড়া জেলার ইতিহাস, অচল ভট্টাচার্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.