বিপুল ভোটে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে একাধিক মামলায় রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা রাখতে পারেনি কলকাতা হাই কোর্ট। তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। বিগত প্রায় সাড়ে সাত মাসে রাজ্য পুলিশের থেকে সিবিআইয়ের হাতে গিয়েছে সাতটি মামলা। যা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
২০২১ সালের ১৯ আগস্ট ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন ও ধর্ষণের ঘটনাগুলির তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয় সিবিআইকে। কলকাতা হাই কোর্ট এই নির্দেশ দেয়। সেই মতো ভোট পরবর্তী হিংসার বিভিন্ন ঘটনায় কেন্দ্রীয় সংস্থা রাজ্যে তদন্ত চালাচ্ছে।
২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হলদিয়া বন্দরে তোলাবাজি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আর্জি খারিজ করে দিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখে।
রামপুরহাটের বগটুকাণ্ডে আটজনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্যের গঠিন বিশেষ তদন্তকারী দলকে তদন্ত বন্ধের নির্দেশ দিয়ে আদালত সকল নথি এবং ধৃতদের সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে বলে। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ২৫ মার্চ এই ঘটনার তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
পুরুলিয়ার ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুন মামলায় ৪ এপ্রিল সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। মৃত কংগ্রেস নেতার পরিবারের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ঝালদা থানার তৎকালীন আইসি সঞ্জীব ঘোষ। তবে রবিবার পুরুলিয়া পুলিশ জানায়, সঞ্জীব নির্দোষ। আর এরপর সোমবার এই মামলার তদন্তভার রাজ্য পুলিশের হাত থেকে কেড়ে সিবিআইকে দেওয়া হয়।
রাজ্য সরকারকে সিবিআই নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিদ্ধ হতে হয়েছে শিক্ষা দফতরের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায়। নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলায় দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত আদালত দিয়েছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে। এই শুনানিতে আদালত কার্যত তাজ্জব হয়ে গিয়েছিল নিয়োগ দেখে। আদালত বলেছিল, এমন জিনিস ভূভারতে দেখা যায়নি যে, পরীক্ষাতেই বসেনি অথচ চাকরি পেয়ে গিয়েছে। এসএসসি-র গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি মামলাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।