দেখা হলেই বলতেন ‘জয় শ্রীকৃষ্ণ’। কোনো লেখা পাঠালেও তা লিখতেন, অথবা লিখতেন ‘হরি ওঁ’। তিনি শ্রীকৃষ্ণের যোদ্ধৃত্ব-রূপের একান্ত উপাসক ছিলেন। বলতেন ভগবান রাধামাধব-কে এই মুহূর্তে বাঁশিতে নয়, সুদর্শন চক্র সমেত পূজা করতে হবে। অগাধ বিশ্বাস ছিল সুদর্শনধারী পুরুষোত্তমের আসন্ন উপস্থিতিতে। তিনি আদ্যন্ত দেশপ্রেমী; তিনি সাংস্কৃতিক-জাতীয়তাবাদ এবং আধ্যাত্মিক জাতীয়তাবাদের একনিষ্ঠ সমর্থক, সর্বোপরি তিনি একজন জনপ্রিয় শিক্ষক। খড়দহের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। শ্রী নয়ন চৌধুরীর অকাল মৃত্যুতে আমি আজ গভীরভাবে মর্মাহত। দুরারোগ্য কোলোন ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে আজ অপরাহ্নে তিনি প্রয়াত হয়েছেন।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল আটচল্লিশ বছর (১৯৭৪ সালের ১৫ ই আগষ্ট তাঁর জন্ম)। তাঁর বেড়ে ওঠা আসানসোলের ইস্টার্ন রেলওয়ে বয়েজ হায়ার সেকেন্ডারী স্কুলে পড়াশোনা করে। তাঁর পিতা একজন রেলকর্মী ছিলেন। তার আগে তিনি বসবাস করেছেন ঝাড়খণ্ডের জামসেদপুরে।
তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা করেন। তখনই ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা হয়। আগে থেকেই তিনি নবতিপর বরিষ্ঠ প্রচারক শ্রী কেশব দীক্ষিত-এর স্নেহ-সান্নিধ্যে আসেন। নয়ন বাবুর সঙ্গে বহু রাষ্ট্রবাদী মানুষের গভীর ও নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
তিনি অকৃতদার ছিলেন। সর্বদা ন্যায় ও শুভশক্তির বিজয়ের পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গেছে তাঁকে। হিন্দু জাগরণের তিনি এক অনন্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ‘দেশের মাটি’ নামক অ-নিবন্ধীকৃত, অরাজনৈতিক বৌদ্ধিক সংগঠনের প্রকাশ লগ্নেও তাঁকে নিত্য সহায়তা করতে দেখা গেছে। তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি এবং পরিবার পরিজনের কাছে গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। ওঁ শান্তি।শান্তি।
2022-03-31