‘ইন্ডাস্ট্রি কি আজ বন্ধ রাখা যেত না?’, অভিষেকের মৃত্যুতে প্রশ্ন তুললেন শুভাশিস

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়-এর আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তাঁর দীর্ঘ বছরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা জনপ্রিয় অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়।

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ।বুধবার রাত ১টা ৪০ মিনিট নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৮ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে টলিপাড়ায়।

অভিষেকের আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তাঁর দীর্ঘ বছরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা জনপ্রিয় অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। বাকরুদ্ধ বলাই ভালো। নব্বইয়ের দশকের বহু ছবিতে তাঁদের দু’জনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। একটা সময় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অভিষেক চট্টোপাধ্যায় এবং শুভাশিস মুখোপাধ্যায়-কে বলা হত টলিপাড়ার ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’। সেই সময়ে এই তিনজন কোনও ছবিতে থাকা মানেই তা সুপারহিট। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা-কে তিনি জানিয়েছেন, ‘মিঠু আমার তো শুধু সহকর্মী ছিল না, আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। আত্মীয়ই হয়ে উঠেছিল। কত বছরের সম্পর্ক আমাদের। তাপসটা চলে গেল কিছুদিন আগে, এবার মিঠু। একটু অভিমানী ছিল তবে ভীষণ সোজাসাপ্টা মানুষ ছিল। বিশ্বাস করুন, আমি জানি না কী প্রতিক্রিয়া দেব। আমরাও তো মানুষ। শিল্পী বলে হয়ত আরও বেশি আবেগপ্রবণ। কত কথা মনে পড়ছে জানেন…’ বলতে বলতে কান্নায় বুজে আসে তাঁর গলা।

সামান্য থেমে ধরা গলায় শুভাশিস ফের বলেন, ‘কত কত দিন একসঙ্গে কাটিয়েছি। ওঁর মেয়ের জন্মদিন আর আমার বিয়ের তারিখ একইদিনে ছিল। তো ও খুব খাওয়াতে ভালোবাসত। নিমন্ত্রণ করত। আর আমি গেলেই সবার সামনে পিছনে লাগত। খালি বলত, কোথায় তুই খাওয়াবি তা না করে আমার মেয়ের জন্মদিন খেতে চলে এসেছিস। ভালোই আছিস বল! কত কত ভাল স্মৃতি আছে আমাদের, সেটাই রেখে দিতে চাই।’

এখানেই অবশ্য থামেননি শুভাশিস, ‘আমি গিয়েছিলাম আজ ওঁকে শেষবার দেখতে। বেশিক্ষণ থাকতে পারিনি। এখন আবার যেতে হবে শ্যুটিংয়ে। আচ্ছা, প্রসেনজিৎ-অভিষেক- তাপস এঁরা তো একটা যুগ ছিল বাংলা ছবির ইতিহাসে। কীসব সুপারহিট ছবি দিয়েছে বক্স অফিসে। তা অভিষেকের মৃত্যুর দিনে কি ইন্ডাস্ট্রি এদিনের কাজ বন্ধ করে রাখতে পারত না? এটুকু সম্মান কি মিঠুর প্রাপ্য ছিল না? জানি না, কী বলব। আমি আর কোনও কিছু বলতে পারছি না। ক্ষমা করবেন।’

গত দশ-বারো দিন ধরে পায়ের শিরায় অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগছিলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়।প্রচুর ওষুধ খেতে হচ্ছিল। অসুস্থ সত্বেও কাল ফ্লোরে যান। তবে কাজ করতে পারেননি। ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ফ্লোরেই। শেষমেশ চ্যানেলের লোকেরাই ধরাধরি করে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়ির লোকের হাজার অনুরোধেও হাসপাতাল যেতে চাননি অভিষেক। বাড়িতেই তাই অক্সিজেন আনা হয়। ওষুধ দেওয়া হয়। এরপর মাঝ রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.