আন্তর্জাতিক আদালতে বড় ধাক্কা খেয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চলা মামলায় আদালতের তরফে রাশিয়াকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে অবিলম্বে তাদের সামরিক অভিযান বন্ধ করা হয়। আন্তর্জাতিক আদালতে যেই বেঞ্চের সামনে এই মামলার শুনানি চলছে, তাতে রয়েছেন মোট ১৫ জন বিচারক। তাঁদের মধ্যে গতকাল রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেন ১৩ জন বিচারক। পক্ষে ছিলেন মাত্র ২ জন। উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া বিচারকদের মধ্যে ছিলেন এক ভারতীয় বিচারকও। বিতারক দলবীর ভাণ্ডারী এদিন রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধের নির্দেশে পক্ষে ভোট দেন।
দলবীর বর্তমানে আন্তর্জাতিক আদালতে নিজের দ্বিতীয় মেয়াদে রয়েছেন। এর আগে ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে ছিলেন। এরপর ভারতের তরফে তাঁকে ফের মনোয়ন দেওয়া হলে ব্রিটেনের মনোনীত প্রার্থীকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে নিজের স্থান পাকা করেন দলবীর।
চলমান যুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে ইউক্রেন অভিযোগ করেছিল যে রাশিয়া ১৯৪৮ সালে ‘গণহত্যা প্রতিরোধ’ চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। উল্টে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া অভিযোগ তুলেছে যে তারা গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত। এবং সেই অভিযোগকেই অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে। এই আবহে ইউক্রেনের আর্জি ছিল যাতে আদালতের হস্তক্ষেপে এই যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ হয়।
এদিকে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক আদালত যেহেতু তাদের এই নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে না, তাই রাশিয়া এই নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে ইউক্রেনে তাদের আগ্রাসন বজায় রাখবে। এর আগেও আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ অগ্রাহ্য করার নজির রয়েছে বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে। তবে আন্তর্জাতিক আদালতের এই নির্দেশ রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক ভাবে রাশিয়ার উপর চাপ বাড়িয়েছে নিঃসন্দেহে। এদিকে এই মামলায় ভারতীয় বিচারক রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার বিষয়টিও তাত্পর্যপূর্ণ। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসংঘে ভারত যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে একবারও ভোট দেয়নি।