এই পৃথিবীর ইতিহাসে সবথেকে বেশি মিথ্যে প্রচার প্রপাগান্ডা হয়েছে যা নিয়ে তা হলো কমিউনিজম। এমনিতেও দুনিয়ার সমস্ত রাজনীতির মধ্যে সবথেকে সহজ এবং সস্তা হল কমিউনিস্ট রাজনীতি। বাস্তবিকই এ হল বিনা পুঁজির ব্যবসা। যে কোনো গরিব মানুষ, বিপন্ন মানুষ, অসহায় মানুষ, বিষাদগ্রস্থ মানুষ বা ক্ষমতালোভী মানুষকে শুধু গিয়ে বুঝিয়ে দাও যে তার এই সমস্যার জন্য দায়ী হলো পুঁজিবাদী অর্থনীতি। এবং কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় আসলে পুঁজিবাদী অর্থনীতি ধ্বংসের পাশাপাশি তার সমস্ত সমস্যারও সমাধান হয়ে যাবে।
এখন সহজে সমাধান কে না চায়? ফলে ন্যূনতম চেষ্টায়, কোন রকম ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই অসংখ্য অসংখ্য মানুষকে কমিউনিস্ট পার্টি এবং কমিউনিস্ট রাজনীতির সমর্থক হিসেবে দলভুক্ত করে ফেলানো যায়। আর এই ভাবেই পৃথিবীর বহু দেশে কমিউনিজমের বিস্তার করেছে এবং তারা তাদের এই মিথ্যে আশাবাদী প্রচারের ফলে নিজেদের ইমেজ এতটাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রেখেছে যে তাদের করা সমস্ত অন্যায়- দুর্নীতি – গণহত্যা – গুপ্তহত্যা – যুদ্ধ সহ যাবতীয় কিছু স্রেফ ধুয়ে মুছে যায়।
যেমন বলা যায় বার্লিনের পতনের পর সোভিয়েত রাশিয়ার সৈন্যদের করা সেই কুখ্যাত বার্লিন গণধর্ষণের ঘটনা বা সোভিয়েতএর করা নিরীহ-নিরাপরাধ পোলিশদের কাতিন গণহত্যা কিংবা চীনে কমিউনিস্ট পার্টির তৈরি কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ কিংবা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের নামে শ্রমিকদের ব্যবহার করে ক্ষমতায় বসে লেনিনের দ্বারা শ্রমিক অধিকার হরণ ইত্যাদি ইত্যাদি এমন অসংখ্য কমিউনিস্ট ক্রাইম আছে কমিউনিস্টরা তাদের তৈরি করা জনদরদী প্রচার দিয়ে ঢাকা দিয়ে রেখেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের মানে খুব বড় ক্রাইম গুলো ছাড়াও ছোটখাটো ক্ষেত্রে আমাদের দেশে বা আমাদের রাজ্যে ধানতলা বানতলা মরিচঝাঁপি নন্দীগ্রাম সিঙ্গুর ইত্যাদি ইত্যাদি যে সমস্ত অন্যায় গুলি কমিউনিস্ট পার্টি করেছে তার সবও ঢাকা পড়ে গেছে তাদের জনদরদী প্রচার এর ফলে। আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি বাম আমলে কমিউনিস্ট পার্টির দ্বারা ক্ষ্তি গ্রস্ত পরিবারের ছেলে বর্তমানে কমিউনিস্ট পার্টি করছে। আসলে তাদের দেখানো সুখ স্বপনে বাস্তবতা ঢাকা পড়ে গিয়েছে।
যাইহোক‚ আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট রাজনীতির সমস্ত চিটিংবাজি‚ অন্যায়‚ অপরাধ সবই তাঁর সুচারু কলমে তুলে ধরেছেন ড. জিষ্ণু বসু তার ‘কমিউনিজম: স্বপ্ন ও বাস্তবতা” বইতে। কমিউনিস্টদের ধোঁকাবাজির সমস্ত স্বরুপ উদ্ঘাটনে করবে এই বই। এই আশাই রাখি।