রকেটের উপর থেকে আমেরিকা, জাপান এবং ব্রিটেনের পতাকা সরিয়ে দিল রাশিয়া। রাখা হল ভারতের তেরঙা। তা নিয়ে একটি ভিডিয়োও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, কেন ওই তিন দেশের পতাকা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ভারতের পতাকা রাখা হয়েছে, তা একেবারেই পরিষ্কার।
রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থার প্রধান দিমিত্রি রোগোজিনের (@Rogozin) টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, রকেটে যে আমেরিকার পতাকা আঁকা ছিল, তা ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। তবে আছে ভারতের পতাকা। ওই টুইটের সঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘বৈকানুরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে কয়েকটি দেশের পতাকা ছাড়া আমাদের রকেট বেশি ভালো দেখতে লাগবে।’
কিন্তু আমেরিকা, জাপান, ব্রিটেনের মতো দেশের পতাকা সরিয়ে ভারতের পতাকা কেন রাখা হল? সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বিষয়টা একেবারে জলের মতো পরিষ্কার। রাশিয়া এবং ইউক্রেন ‘যুদ্ধ’ শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক স্তরে সরাসরি মস্কোর বিরোধিতা করেনি ভারত। ‘যুদ্ধ’ শুরুর পর রাষ্ট্রসংঘে তিনবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে নয়াদিল্লি। গত সপ্তাহে ইউক্রেন ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটদান থেকে বিরত ছিল ভারত। রাশিয়ার ‘আক্রমণের’ বিরোধিতায় রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল। তা নিয়ে ভোটাভুটি হয়েছিল। পরবর্তীতেও ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকলেও কিছুটা ‘সুর’ বদল করেছে ভারত। বুধবারও সেই একই অবস্থান নেয় ভারত।
বুধবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের বিশেষ অধিবেশন ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। ভোটাভুটির মাধ্যমে সেই প্রস্তাবনা গৃহীত হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ১৩৫ টি ভোট পড়ে। পাঁচটি সদস্য দেশ সেই প্রস্তাবের বিপক্ষে দেয়। ভারত-সহ ৩৫ টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত থাকে। কী কারণে ভারত ভোটদান প্রক্রিয়া থেকে বিরত ছিল, তা নিয়ে যুক্তি দেন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের অবস্থানে অনড় যে শুধুমাত্র আলোচনা এবং কূটনীতির মাধ্যমেই বিবাদের সমাধান করতে হবে। রাশিয়া এবং ইউক্রেন-সহ বিশ্বব্যাপী নেতাদের সঙ্গে আলোচনার সময় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সেটাই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদী। (ইউক্রেনে) ত্রাণ পাঠানো এবং আটকে থাকা সাধারণ নাগরিকদের উদ্ধারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন তিনি। তাই আমাদের আন্তরিক আশা যে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে ইতিবাচক ফল মিলবে।’ সেইসঙ্গে গত সোমবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যে ‘সুর’ বদল করা হয়েছিল, বুধবার তা বজায় রেখেছে ভারত। আন্তর্জাতিক আইন এবং সকল দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য রাষ্ট্রসংঘের সকল সদস্য দেশকে আর্জি জানিয়েছেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি।