আমি ভিনিতসিয়ায় থাকতাম। ওখানে সেভাবে ‘যুদ্ধের’ প্রভাব পড়েনি। ফলে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে নিজেদের হস্টেলেই থাকছিলাম। শুধু কার্ফু ছিল। তারইমধ্যে ভারতীয় দূতাবাসের জন্য যোগাযোগ করা হয়। তারপর বাসে করে হাঙ্গেরি সীমান্তের দিকে রওনা দিই।
আমরা যে সীমান্ত দিয়ে হাঙ্গেরিতে ঢুকব, সেখানে তেমন হুড়োহুড়ি নেই। ফলে বাসে প্রায় ২২ ঘণ্টা কাটাতে হলেও কোনওরকম সমস্যা হয়নি। খুব যে ভিড় ছিল, বাসে ওঠা যাচ্ছিল না – সেরকম কোনও ব্যাপার ছিল না। বরং সীমান্তের দিকে যাওয়ার জন্য আমাদের আগেই রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছিল। বাস অনুমতি না পাওয়ায় কিছুটা অপেক্ষা করতে হয়েছিল।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
তবে ঘনঘন চেকিং হচ্ছিল। তা এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকও। শান্তিপূর্ণ দেশ তো। মূলত পরিচয়পত্র দেখে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছিল। আর আমাদের বাসের সামনে ভারতের জাতীয় পতাকা ছিল। তাই কোনও সমস্যা হয়নি। পুরোপুরি সুরক্ষিতভাবে বাসে করে এসেছি।
গত মঙ্গলবার আমরা উরজুতে পৌঁছে গিয়েছি। আপাতত একটি হস্টেলে আছি। সেখান থেকে সম্ভবত আগামিকাল (বৃহস্পতিবার) ভোর পাঁচটা নাগাদ আমরা সীমান্তের দিকে রওনা দেব। এখান থেকে বাসে চেপে হাঙ্গেরি সীমান্তে পৌঁছাতে ৩০ মিনিট মতো লাগবে। সীমান্তে পৌঁছেও কোনও সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের বাস থেকে নামতেও হবে না। আমরা বর্ডার পেরিয়ে হাঙ্গেরিতে ভারতীয় দূতাবাসের হোটেলে গিয়ে উঠব। সেখানে পুরোটাই বিনামূল্যে বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ওখানে তিন-চারদিন হয়তো লাগবে। সেখানে অনেকেই আছেন। তারপর যেমন বিমান পাব, সেভাবে দেশে ফিরব।
এখানে একটা বিষয় অবশ্যই বলব, অনেকেই ভারতীয় দূতাবাস নিয়ে অভিযোগ করছেন। তবে আমার ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই দূতাবাসের সাহায্য পেয়েছি। কোনওরকম অভিযোগের জায়গা নেই। কোনও দেশ সীমান্ত খোলার অনুমতি দিলে তবেই তো দূতাবাস কিছু করতে পারবে।
(পড়াশোনা জীবনের একটা বড় অংশ গুজরাতে কাটলেও আদতে বারাসতের ছেলে অনিন্দ্যশেখর ভদ্র। ভিনিতসিয়া ন্যাশনাল পাইরোগভ মেমোরিলাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া তিনি। সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখিত।)