অতিমারি শুরুর পরে দুটো বছর কেটে গিয়েছে। একদিকে যেমন একের পর এক গবেষণায় উঠে এসেছে করোনাভাইরাস সম্পর্কে নতুন নতুন দিক, তেমনই করোনা সম্পর্কে মানুষের সচেতনতাও বেড়েছে। একেবারে গোড়ার দিকে যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের নিয়ে চারপাশের মানুষের যতটা উদ্বেগ ছিল, তার চেয়ে বড় কথা, যতটা ছুতমার্গ ছিল, তার অনেকটাই এখন কমেছে।
কিন্তু পরিস্থিতি বদলে গেলেও পুরনো দিনের স্মৃতি এখনও রয়েই গিয়েছে। কেমন প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলেন, যখন জানতে পেরেছিলেন, করোনায় আক্রান্ত? কেমন মনোভাব দেখিয়েছিলেন বন্ধুবান্ধব আত্মীয়রা? হালে হিন্দুস্তান টাইমসকে এই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন দিল্লির রোহিত দত্ত। ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
২০২০ সালের ১ মার্চ কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ে রোহিতের। দিল্লির প্রথম বাসিন্দা, যিনি করোনায় আক্রান্ত হন। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রশ্নের উত্তরে ৪৭ বছরের রোহিত বলেছেন, ওই দিনটির কথা তিনি কখনও ভুলতে পারবেন না।
কী হয়েছিল তার আগে?
কর্মসূত্রে ইতালিতে যাতায়াত আছে রোহিতের। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই তিনি ইতালি যান। সেখানে অল্প জ্বর হয় তাঁর। চিকিৎসকরা বলেন, তিনি সাধারণ ফ্লুয়ে আক্রান্ত। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পরে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন।
দিল্লি ফিরে আসার কিছু দিন পরে তাঁর ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে ২৮ ফেব্রুয়ারি ছোট একটি পার্টির আয়োজন করেন তিনি। সেই পার্টিতে পরিবারের লোকজন ছাড়াও ছিলেন কয়েক জন বন্ধুও। পার্টির দিন দুয়েক পরেই আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। চিকিৎসকরা তাঁর কোভিড পরীক্ষা করান। দেখা যায়, তিনি কোভিড পজিটিভ। সেটাই ছিল ১ মার্চ।
রোহিতের কথায়, ‘সেই সময়ে সংক্রমণটি নিয়ে নানা ধরনের ভুল ধারণা এবং ছুতমার্গ ছিল মানুষের মধ্যে। কোভিড সারিয়ে উঠতে যত দিন লেগেছিল, তার চেয়ে বেশি দিন লেগে যায় সেই জটিল পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে। নিজেরও অপরাধবোধ হত।’
তার পরে দুটো বছর কেটে গিয়েছে। আর কখনও কোভিডে আক্রান্ত হননি তিনি। যদিও পরিবারের অনেকেই ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং সময়মতো সেরেও গিয়েছেন।
দু’বছর পরে এখন চারপাশের মানুষজন কী বলেন? রোহিতের কথায়, এখন সবাই বিষয়টি নিয়ে সচেতন হয়েছেন। কোভিডের হাত থেকে যে সহজে মুক্তি পাওয়া যাবে না, তাও বুঝেছেন। কিন্তু এখনও সেই প্রসঙ্গ উঠলেই বন্ধু আর আত্মীয়রা তাঁর সঙ্গে ঠাট্টা করেন। তিক্ত অনুভূতিগুলি এখন চলে গিয়ে বিষয়টি হাল্কা চালে স্মৃতি হিসাবে রয়ে গিয়েছে সকলের মধ্যে। এমনই জানিয়েছেন রোহিত দত্ত।