ইউক্রেন সংকটে ভারতের ‘স্বাধীন অবস্থান’-কে স্বাগত জানাল রাশিয়া। ক্রেমলিনের তরফে জানানো হল, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারত যে মতামত ব্যক্ত করেছে, তা থেকেই স্পষ্ট যে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক কতটা ভালো।
রাষ্ট্রসংযের রাশিয়ার উপ-দূত রোমান বাবুশকিন জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে বিশ্বের অন্যতম দায়িত্ববান দেশের ভূমিকা পালন করছে ভারত। বিশ্বের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর ক্ষেত্রে ‘স্বাধীন এবং ভারসাম্যমূলক’ অবস্থান নিয়েছে নয়াদিল্লি। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, ভারত এবং রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ইউক্রেন সংকটের কোনও প্রভাব পড়বে না। বরং আগামী মাসে গুজরাটে ‘ডেফএক্সপো’-তে রাশিয়ার প্রচুর প্রতিনিধি থাকবেন। বাবুশকিনের কথায়, ‘রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দু’বার ভারত যে স্বাধীন অবস্থান নিয়েছে, তার স্বাগত জানাচ্ছি। যে মতামত খোলাখুলি জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এবং অন্যান্য আধিকারিকরা।’
এমনিতে প্রথম থেকেই ইউক্রেন-রাশিয়ার সংঘাত নিয়ে কোনও পক্ষ অবলম্বন করেনি নয়াদিল্লি। রাশিয়া এবং আমেরিকা – দুই ‘শত্রু’ দেশের সঙ্গেই কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকায় কাউকেই চটাতে চায়নি ভারত। তারইমধ্যে মঙ্গলবার প্যারিসে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর জানান, এখন যে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত চলছে, তার বীজ অন্তর্নিহিত আছে সোভিয়েত পতনের পরবর্তী রাজনীতির মধ্যে। তাঁর কথায়, ‘গত ৩০ বছর ধরে যে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তারই ফলাফল হল ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি। ভারত, ফ্রান্সের মতো অধিকাংশ দেশই কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানের পক্ষে সওয়াল করছে।’
উল্লেখ্য, পশ্চিমী দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারিকে তোয়াক্কা না করে সোমবার পূর্ব ইউক্রেনের দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী এলাকাকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।সরকারি সংবাদমাধ্যমে আবেগ মেশানো বার্তায় পুতিন বলেন, ‘আমার বিশ্বাস যে ডোনেত্সক গণপ্রজাতন্ত্রী এবং লুহানৎসক গণপ্রজাতন্ত্রীর স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজন আছে। যে সিদ্ধান্ত দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে ছিল।’ মঙ্গলবার পুতিনের সেই সিদ্ধান্তে সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়ার সংসদ উচ্চকক্ষ। সেদিনই ইউক্রেনে ‘আক্রমণ শুরুর’ জন্য রাশিয়ার উপর একগুচ্ছ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা-সহ একাধিক দেশ।