ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষণা করলেন রাশিযার ভ্লাদিমির পুতিন। ‘শত্রু’ ইউক্রেনের সেনাকে আত্মসমপর্ণের বার্তাও দিলেন তিনি। তার জেরে স্বভাবতই ইউরোপের আকাশে যুদ্ধের কালো মেঘ আরও গভীর হয়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, এবার কি তাহলে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল?
কিছুটা চমক দিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ছ’টার কিছুটা আগে (স্থানীয় সময়) টেলিভিশন বার্তায় পুতিন বলেন, ‘আমি সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ ইউক্রেনের বাহিনীকে অস্ত্র ছাড়ার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়াকে পুতিন হুঁশিয়ারি দেন, যে দেশ সেই ‘সামরিক অভিযানে’ হস্তক্ষেপ করবে, তাদের ফল ভুগতে হবে। তিনি অভিযোগ করেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোয় যোগদান থেকে বিরত করার যে দাবি করছিল ক্রেমলিন, তাতে কোনও ভ্রূক্ষেপ করেনি আমেরিকা এবং বন্ধু রাষ্ট্রগুলি। সেই পরিস্থিতিতে ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষণা করলেও ইউক্রেন দখলের কোনও অভিপ্রায় নেই বলে দাবি করেছেন পুুতিন।
রাশিযার প্রেসিডেন্টের সেই ঘোষণার আগেই ক্রেমলিনের তরফে দাবি করা হয়, কিয়েভের বিরুদ্ধে সামরিক সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন পূর্ব ইউক্রেনের ‘বিদ্রোহী’ নেতারা। প্রত্যুত্তরে রাতের দিকে আবেগময় বার্তায় রাশিয়ার মানুষকে ‘ইউরোপে বড়সড় যুদ্ধকে’ সমর্থন না করার আর্জি জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ান ভাষায় জেলেনস্কি অভিযোগ করেন যে কিয়েভের বিষয়ে রাশিয়ার মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন পুতিনরা। ইতিমধ্যে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে দু’লাখ ফৌজি মোতায়েন করেছে মস্কো। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কারা (যুদ্ধ) রুখতে পারবেন? মানুষ। আপনারাই হলেন সেই মানুষ। আমি সে বিষয়ে নিশ্চিত।’ সেইসঙ্গে জেলেনস্কি দাবি করেন, পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি।
তারইমধ্যে বুধবার রাতে ইউক্রেন সংকট নিয়ে আরও একটি জরুরি বৈঠক করেছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তাতে রাশিয়াকে ‘শান্তি রক্ষার’ আর্জি জানানো হয়। রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্টনিও গুতেরেজ বলেন, ‘যদি সত্যিই কোনও অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়, তাহলে আমি হৃদয় থেকে একটা কথাই বলতে চাই, প্রেসিডেন্ট পুতিন, আপনার লোকেদের ইউক্রেনে আক্রমণ চালানো থেকে বিরত রাখুন। শান্তির একটা সুযোগ দিন। প্রচুর মানুষ ইতিমধ্যে জীবন হারিয়েছেন।’