বামেদের কে ভোট দেওয়ার আগে একবার পড়ে নেবেন প্লিজ: শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ইতিকথা: 

34 বছর যখন হাজার হাজার কারখানা বন্ধ হচ্ছিলো, তখন বন্ধ কারখানার শ্রমিকের থেকেও মাসিক চাঁদা নিতে দ্বিধা করতেন না চিত্তব্রত মজুমদার, সরোজ মুখার্জী কিংবা শ্যামল চক্রবর্তীর সিটু ক্যাডাররা l কিন্তু 34 বছরে কেউ ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’ দেখেছেন? উল্টে ভিখারী পাসোয়ানদের মত শ্রমিকদের যখন মিলমালিকরা খুন করে জলে ভাসিয়েছেন, তখন পুলিশ দিয়ে শ্রমিকদের শায়েস্তা করেছেন জ্যোতিবসু, মনীশ  গুপ্ত, রচপাল সিং সুলতান সিং, জাটুয়াদের পুলিশ l পরবর্তীকালে সবাই তৃণমূলের সংসদ, বিধায়ক কিংবা মন্ত্রী হয়েছেন l দুর্ভাগ্য একমাত্র জ্যোতিবাবুর ! উনি আগেই মহাপ্রস্থানের পথে রওনা দিয়েছেন l 

কিন্তু এই ক্যান্টিন চালানোর টাকা কথা থেকে আসছে? এই প্রসঙ্গে, পার্টির প্রতিদিন  শুধু রিকশাওয়ালাদের থেকে কত চাঁদা উঠতো তার একটা হিসাব নেয়া যাক l পাটুলিতে একজন রিকশাওয়ালাকে মাসে 300 অর্থাৎ দিনে 10 টাকা দিতে হত l যদি যাদবপুর বিধানসভায় 1000 রিকশাওয়ালা থাকে তবে দিনে 10000. তাহেল 294 বিধানসভায় মোট 29, 40, 000/- টাকা @ 2011 price index. 34 বছরে 34x356x2940000= 3648 কোটি শুধু রিক্সাওয়ালা থেকে l 

এছাড়া অটোওয়ালা, বাজারের সবজিবিক্রেতা, হকার, সরকারি কর্মচারী, প্রোমোটার, ঠিকাদার, সিন্ডিকেট, ট্যাক্সিওয়ালা, বাসওয়ালা, বন্ধকারখানার মালিক, কিংবা হলদিয়া বন্দরের দিনমজুর ইত্যাদি যোগ করলে, মোট কয়েক ট্রিলিয়ান l 

কিন্তু কোথায় আছে এতো টাকা? সম্ভবত কেউ জানে না l কিন্তু 2006 বিধানসভা ভোটের আগে অধীর চৌধুরীকে একটা মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করলে তিনি ইটিভি বাংলা নিউস চ্যানেলকে বলেন সিপিএম এর রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের সুইস ব্যাংকের একাউন্ট নম্বর বলে দেবেন জামিন পেলেই l জামিন পাবার আগেই হঠাৎ সেরিব্রাল হয়ে মৃত্যু হয় বামসাম্রাজ্যের মেকিয়াভেলীর l তারপর অবশ্য এই নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য হয় নি l 235-30 এ জিতে শেষবারের মত ফিরে আসে কার্ল মার্কসের শিষ্যগন l

কিন্তু কি হয় এই টাকা দিয়ে? কিংবা হত? উত্তর লুকিয়ে আছে মন্ত্রীদের তথাকথিত স্বার্থত্যাগের নমুনায় l সিপিএম মন্ত্রীরা কেউ সরকারের থেকে মাইনে নিতেন না l তাহলে চলতো কিভাবে তাঁদের সংসার? এদের ছেলেমেয়েরা তো সাউথ পয়েন্ট,  পাঠ ভবনে পড়তেন l আমাদের মত 20 টাকার স্কুলে তো পড়তেন না?  খরচ যোগাতো কে?  এই গৌরী সেন তথা সর্বশক্তিমান ‘পার্টি’ l আর সেনমহাশয়ের ভান্ডারের উৎস ওই রিকশাওয়ালারা l

যে কোন ব্যাবসায়ী কিছু টাকা সরিয়ে রেখে দেন ভবিষ্যতের জন্য l একটা ব্যবসায় তালা পড়লে আরেকটা ব্যবসা l সিপিএমও সেই বিনিয়োগ শুরু করেছে l শ্রমজীবি ক্যান্টিনের মাধ্যমে l 1977 এ যেভাবে কংগ্রেস ও জনতা পার্টির ভোট বিভাজনে জ্যোতিবাবুর কপাল খুলেছিলো, যদি সেভাবে মমতা ব্যানার্জী-দিলীপ ঘোষের দন্দে একবার সেই সৌভাগ্য বিকাশ-সুজনদের হয়, 2011 র 300 টাকা বেড়ে হবে 2021 এর 600 l তার সঙ্গে দশ বছরের বাকি চাঁদার কিস্তি l সব মিলে মাসে 1000 টাকা গোনার জন্য প্রস্তুতি নিক শ্রমজীবী বাঙালী l প্রচুর খাটতে হবে l গায়ে জোর চাই l শ্রমজীবী ক্যান্টিনের কুপন কাটুন, পুষ্টিকর খাবার খান ও শ্রমের ক্ষমতা বাড়ান l মনে করিয়ে দিলাম l পরে কিন্তু দোষ দেবেন না l 

লেখক: সুদীপ্ত গুহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.