করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাব ভারতে কমতে শুরু করেছে। কমছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা। কমছে সংক্রমণের হারও। ওমিক্রন নিয়ে গোড়ায় যতটা ভয় পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা, ততটা আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছোতে পারেনি এই সংক্রমণটি।
কিন্তু এটি শুধুমাত্র ভারতের ছবি। এর পাশাপাশি আমেরিকা বা ইংল্যান্ডে ওমিক্রনের ছবিটা মোটেই এত সহজ সরল নয়। সে সব দেশে ওমিক্রনের ফলে ভালোই ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এর কারণ কী? কেন ভারতে করোনার এই রূপটি তেমন ভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি? কেন প্রচুর মানুষ সংক্রমিত হওয়ার পরেও এই সংক্রমণটি সেভাবে ধরাশায়ী করতে পারেনি ভারতের বেশির ভাগ মানুষকে? এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞানী একটি ধারণা দিচ্ছেন। ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
হালে দেসের নামজাদা চিকিৎসক এবং সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ পদ্মনাভ শেনয় Livemint.com-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এর পিছনে একটি বিষয় কাজ করেছে। সেটিকে বলে Hybrid immunity। আর এই Hybrid immunity তৈরির পিছনে রয়েছে দু’টি কারণ।
সেই কারণ দু’টি কী কী?
- দেশের প্রচুর মানুষের ডেল্টা সংক্রমণ হয়েছিল মারাত্মক ভাবে। বড় সংখ্যক মানুষ করোনার ওই রূপটিতে সংক্রমিত হয়ে গিয়েছিলেন।
- দেশে টিকাকরণের হার ভালো। যাঁদের এর আগে কোভিড সংক্রমণ হয়েছে, তাঁরাও টিকা পেয়েছেন।
Hybrid immunity কী?
এই Hybrid immunity-র কারণেই ওমিক্রন সংক্রমণ ভারতে মারাত্মক আকার ধারণ করেনি বলে মত চিকিৎসকের। এটি অর্থ হল সংক্রমণ থেকে তৈরি হওয়া রোগ প্রতিরোধ শক্তি এবং টিকা থেকে পাওয়া রোগ প্রতিরোধ শক্তি— দু’টি একসঙ্গে শরীরে থাকা।
ভারতের বহু মানুষের ক্ষেত্রে এটিই হয়েছে। তার ফলেই ওমিক্রন বিশেষ ক্ষতি করতে পারেনি এখানে।
কী বলছে পরিসংখ্যান:
- দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের ডেল্টা সংক্রমণ হয়েছিল।
- টিকা পাওয়ার বয়সের দলে থাকা মানুষের ৯৫ শতাংশেরই টিকাকরণ হয়েছে।
- প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষই অন্ত একটি করে টিকার ডোজ পেয়েছেন।
- দেশের প্রায় চার ভাগের তিন ভাগ মানুষেরই এই Hybrid immunity ছিল।
এই কারণে ভারতে ভবিষ্যতেও কি কোভিড মারাত্মক আকার নেবে না?
এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা। তবে তাঁদের মত, ভারতীয়রা যেভাবে ওমিক্রন প্রতিহত করেছেন, তা আশার আলো দেখাচ্ছে— সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।