কাকপক্ষীতেও টের পায়নি৷ এতটাই গোপন ছিল কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়টি৷ এমনকী এই ইস্যুতে কিচ্ছু জানতেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও৷ শুধু তাই নয় সরকারি উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা, যাদের হাত দিয়ে বিভিন্ন ফাইল রাষ্ট্রপতি ভবনে যায় সইয়ের জন্য, তাঁরাও কোনও হদিশ পাননি ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়ে৷
জম্মু কাশ্মীরের জন্য কিছু পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের৷ হাওয়ায় এই জল্পনা ছিল দীর্ঘদিন ধরেই৷ কিন্তু সেটা ঠিক কি? উত্তর ছিল না কারোর কাছে৷ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে পর্যন্ত এই প্রসঙ্গে রীতিমত অন্ধকারে ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকরা৷
উল্লেখ্য মোদী সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আলোচনা চলেছিল কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়ে৷ তবে সেটা কীভাবে কার্যকর করা হবে এবং তা কবে হবে, সে সংক্রান্ত আলোচনা প্রকাশ্যে আসেনি কখনও৷
সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক সারেন অমিত শাহ সহ সব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা। সেখান থেকেই সোজা পার্লামেন্টে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রবিবার সকালে কাশ্মীরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের মুখোমুখি হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
শুধু অজিত দোভালই নয়, সেই বৈঠকে ছিলেন আইবি প্রধান অরবিন্দ কুমার, র’-এর অফিসার সামন্ত গোয়েল। স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গৌবা ও অন্যান্যা আধিকারিকরা। রবিবার সারা দিন ধরে দফায় দফায় এই বৈঠক চলে।
এরই মধ্যে রবিবার মধ্যরাতে হঠাত করেই গৃহবন্দি করা হয় দুবারের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লাকে। শুধু তাই নয়, গৃহবন্দি হন প্রাক্তন বিধায়ক সাজ্জাদ লোনও। গ্রেফতার সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামি এবং কংগ্রেস নেতা উসমান মজিদ।
হঠাত করে কেন এমন সিদ্ধান্ত সরকারের তা নিয়ে আরও জল্পনা-আতঙ্ক তৈরি হয়। যদিও এভাবে গৃহবন্দি করা করায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি জানান, এভাবে বাক স্বাধীনতা হরন করা যাবে না। মোদী সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন ওমর আবদুল্লাও। তাঁর হুঁশিয়ারি, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।
এরপরেই উপত্যকা জুড়ে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। অনির্দিষ্ট কালের জন্য জারি করা হয় কার্ফু। আগামী নির্দেশ দেওয়া না পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়। কোনও জায়গায় জমায়েত দেখলেই প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করার পরেই কাশ্মীর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অজিত দোভাল।