নশ্বর দেহ পঞ্চভূতে লীন হতে পারে। কিন্তু সুরালোকে যে সংগীতের মায়াজাল তিনি দশকের পর দশক ধরে তৈরি করেছেন তা অমর। বাঘাযতীন মৈত্রী সঙ্ঘের সদস্যদের কাছে সুরের সরস্বতী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। বাগদেবীর আরাধনার পরদিনই নশ্বর দেহ ত্যাগ করেছেন কিংবদন্তি শিল্পী। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে বিশেষ উদ্যোগ নিলেন ক্লাবের সদস্যরা। সরস্বতী পুজো শেষ করলেন না তাঁরা। প্রতিমার জায়গায় লতা মঙ্গেশকরের ছবি এঁকে ফের করলেন পুজোর আয়োজন।
হিন্দুধর্ম অনুসারে জ্ঞান, বিদ্যা, শিল্পকলা ও সংগীতের আরাধ্যা দেবী সরস্বতী। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে দেবীর পুজো করেন ভক্তরা। সেই তিথি শুরু হয় শনিবার। শেষ হয় রবিবার ৬ ফেব্রুয়ারি (ইংরেজি মতে) ভোর ৪.৪৮ মিনিটে। তিথি অনুযায়ী তো পুজো শেষ। এদিকে তার কিছু পরেই খবর আসে প্রয়াত হয়েছেন দেশের সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর।
বাঘাযতীন মৈত্রী সঙ্ঘ ক্লাবের দীপঙ্কর মজুমদার বলেন, “খবরটা শোনার পর আমরা সকলে স্তব্ধ। বলার মত ভাষা পাচ্ছি না। আজকেই (রবিবার) মা সরস্বতীর বিসর্জনের দিন। সেইদিনই আমাদের সরস্বতী আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেলেন। ক্লাবের তরফ থেকে ঠিক হয় সরস্বতী যেভাবে বীণা হাতে বসে থাকেন তেমনই ছবি আঁকা হবে সুরসম্রাজ্ঞীর।”
১০ ফুট লম্বা এই ক্যানভাস আনা হয় ক্লাব প্রাঙ্গনে। সেখানেই ছবি আঁকা শুরু করেন শিল্পী সোমনীল সাহা। পেল্লায় ক্যানভাসের এক অংশে আঁকা হয় লতা মঙ্গেশকরের ছবি, আর তার অন্য অংশে ফুটে ওঠে বীণাপানির ছবি। ক্লাবের কর্মকর্তাদের কথায়, “পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বরের সৃষ্টিকারী রূপের নাম ব্রহ্মা। আর ব্রহ্মার নারী শক্তির নাম সরস্বতী। লতা মঙ্গেশকরও আমাদের কাছে সরস্বতী স্বরূপ।” বিশাল ক্যানভাসে লতার আঁকা এই ছবিকে উদ্দেশ্য করেই নতুন করে শুরু হয় পুজো। উচ্চারিত হয় মন্ত্র – “ওঁ নমো সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে। বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাং দেহি নমোহস্তুতে॥”