School Reopen: রাজ্য জুড়ে খুলল স্কুল-কলেজ, খুশি পড়ুয়া থেকে শিক্ষক, বিধি মানতে হিমশিম

করোনার স্ফিতি সামান্য স্তিমিত হতেই বৃহস্পতিবার গোটা রাজ্য জুড়ে খুলে গেল স্কুল-কলেজ। সংক্রমণ নিয়ে চিন্তা থাকলেও শিক্ষক, পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের চোখে-মুখে উদ্দীপনার ছাপ স্পষ্ট ছিল। গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর থেকেই স্কুলগুলিতে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গল ও বুধবার জীবাণুমুক্তকরণ (স্যানিটাইজেশন)-এর কাজ চলার পর বৃহস্পতিবার খুলে গেল স্কুল-কলেজের দরজা।

বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সাজ সাজ রব। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক অরুণাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কোভিডবিধি যাতে মেনে চলা হয়, সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশ মেনেই সব করা হয়েছে। গত কালই জীবাণুমুক্তকরণের কাজ শেষ হয়েছে।’’ প্রায় দু’বছর পর গত নভেম্বরে স্কুল খুললেও অতিমারির ধাক্কায় জানুয়ারি মাসে তা বন্ধ হয়ে যায়। মাসখানেক প্রতীক্ষার পর আবার স্কুল-কলেজ খোলায় খুশি পড়ুয়ারাও। সুবর্ণদীপ সামন্ত নামে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের এক ছাত্রের কথায়, ‘‘এত দিন ঘরে বসে কেটেছে। আজ আবার স্কুলে এলাম। আবার সবার সঙ্গে দেখা হল। ভীষণ ভাল লাগছে।’’ পড়ুয়াদের মাস্ক বিলি করতে দেখা গিয়েছে বর্ধমানের কাঞ্চননগর দীননাথ দাস হাই স্কুলে। স্কুলে ঢোকার মুখে তাদের হাতে দেওয়া হয় স্যানিটাইজার। থার্মাল গান দিয়ে পড়ুয়াদের শরীরের তাপমাত্রাও মাপা হয়।

একই ছবি দেখা গিয়েছে বীরভূম উচ্চ বিদ্যালয়ে। পড়ুয়াদের হাতে চকোলেট ও ফুলও তুলে দেন শিক্ষকেরা। ওই স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন পর ছাত্ররা স্কুলে ফিরছে। ওরাও যেমন খুশি, আমরাও। তাই চকোলেট আর ফুল দিয়েছি ওদের।’’

মাস্ক পরা এবং স্যানিটাইজার ব্যবহারের মতো কোভিডবিধি প্রায় সর্বত্র মেনে চলা হলেও শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার বিষয়টি সব জায়গায় মানা হয়নি। সংক্রমণ ছড়ানোর আতঙ্ক নিয়ে পড়ুয়াদের ঠাসাঠাসি করেই ক্লাসঘরে বসতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে মালদহের বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ে। তবে প্রধান শিক্ষিকা দিপশ্রী মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছি, যাতে কোভিডবিধি মেনেই স্কুল চালানো যায়।’’

বাঁকুড়াতেও অধিকাংশ জায়গায় ঢাকঢোল পিটিয়ে স্কুল খুলেছে বৃহস্পতিবার। কিন্তু প্রথম দিনের হাজিরার হার কার্যত হতাশ করেছে শিক্ষকদের। বাঁকুড়ার অধিকাংশ স্কুলে পড়ুয়ার উপস্থিতি ছিল পাঁচ শতাংশের আশপাশে। জেলার বঙ্গ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে হাজির হয়েছিল ৪০ জন পড়ুয়া। পুরন্দরপুর হাই স্কুলে ক্লাস হাজিরা ছিল মাত্র দুই থেকে চার জন। পড়ুয়াদের উপস্থিতির এই হাল দেখে হতাশ হয়ে শিক্ষকেরা পাশের গ্রামগুলিতে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে দেখা করেন। শিক্ষক দীপককুমার দুলে বলেন, ‘‘সামনেই সরস্বতী পুজো। সে কারণেই হয়তো অধিকাংশ পড়ুয়া আজ স্কুলে আসেনি। আশা করছি, সোমবার থেকে পড়ুয়াদের হাজিরার হার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.