ভট্টাচার্য ও মুখোপাধ্যায়ের আড়ালে হারিয়ে গেলো ‘পদ্ম’ পুরস্কার প্রাপক এক বন্দ্যোপাধ্যায়

বড়োই বিচিত্র আমাদের দেশ। জাতীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দিলেন যারা, তাদের নিয়ে আম পাবলিকের যতো মাতামাতি তার ভগ্নাংশও দেখলাম না এবারের এক ‘পদ্ম’ পুরস্কার প্রাপককে নিয়ে। ভট্টাচার্য ও মুখোপাধ্যায়ের আড়ালে হারিয়ে গেলো এক বন্দোপাধ্যায়ের বিরল কৃতিত্ব।

শুধু পুরস্কার পাওয়াই বা বলছি কেন, গত ছয় বছর ধরে দেশের এক সেরা উৎকর্ষ কেন্দ্রের প্রথম মহিলা ডিরেক্টর তিনি। ২০১৫ সালে আচার্য প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশের তৈরী Indian Statistical Institute এর প্রথম মহিলা ডিরেক্টর পদে আসীন হয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন…. মেয়েরাও পারে !‌ আমরা কিন্তু জেনেও উদাসীন…..

জন্ম ১৯৬৮ সালে উত্তর চব্বিশ পরগনার খড়দহে। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে B.Sc পাশ করার পর রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ থেকে B.Tech. খড়্গপুর IIT থেকে M.Tech করার পর কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি করেন ISI থেকে। পোস্ট ডক্টরেট করেন সিডনি ও টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। গবেষণার বিষয়বস্তু ছিলো Evolutionary computation, Pattern recognition, Machine learning এবং Bioinformatics. কোনটাই বুঝিনা, তাই আর বিশদে গেলাম না !

বিভিন্ন সময়ে কাজ করেছেন বিশ্বের অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনাগারে। এরমাঝে উল্লেখযোগ্য হলো পরমাণু বোমার আঁতুরঘর লস আ্যলামস ন্যাশনাল ল্যাব ও মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা। ইউরোপের প্রাচীনতম জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং রোমে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিয়োরেটিক্যাল ফিজিক্স, যার প্রতিষ্ঠাতা এক নোবেলজয়ী পরমাণু বিজ্ঞানী…. এনরিকো ফার্মি।‌

কম্পিউটার সায়েন্সে তাঁর কৃতিত্বের জন্য ইতিমধ্যেই সম্মানিত হয়েছেন বিভিন্ন পুরস্কারে। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে বিজ্ঞানে ভারতর সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মাননা, ‘শান্তিস্বরূপ ভাটনগর'(২০১০)পুরস্কার। এছাড়াও পেয়েছেন ইনফোসিস ও জগদীশ চন্দ্র বসু ফেলোশিপ সহ দেশ বিদেশের আরো অনেক পুরস্কার। ইনি ডক্টর #সঙ্ঘমিত্রা_বন্দোপাধ্যায় এবছরের একজন #পদ্মশ্রী প্রাপক। নাম শোনেননি অনেকেই এবং খবরেও নেই। বর্তমানে Indian Statistical Institute এর সর্বময় কর্ত্রী হবার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বিজ্ঞান ও কারিগরি উপদেষ্টা মন্ডলীর এক অন্যতম সদস্য। পদ্মশ্রী পেয়ে উনি সম্মানিত, না ওনার কাছে গিয়ে পদ্মশ্রী সম্মানিত সেটা অবশ্য বলবে ভবিষ্যত !

বিজ্ঞান সাধনায় অভুতপূর্ব অবদানের জন্য যাদেরকে একালের ‘লীলাবতী’ আখ্যা দেয়া হয়, সেই ডক্টর বিভা চৌধুরী, ডক্টর অসীমা চট্টোপাধ্যায় বা ডক্টর পূর্ণিমা সেনগুপ্তর সাথে এক তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়েছে ডক্টর সঙ্ঘমিত্রার নাম।

পুরস্কার নেয়া উচিৎ না ফেরানো সেই বিতর্ক চুলোয় যাক, বাঙালি হিসেবে ওনাকে নিয়ে আমরা গর্ব করতেই পারি…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.