সরকার যেভাবে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করল, তা জাতীয় সংহতির লক্ষ্যে এক বিরাট পদক্ষেপ। সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যসভায় বিবৃতি দেওয়ার পরে টুইটারে এমনই মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি লিখেছেন, একটা ঐতিহাসিক ভুল এতদিনে সংশোধিত হল। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অভিনন্দন জানাই।
অমিত শাহ এদিন সংসদে বলেন, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে দিয়েছেন। জম্মু-কাশ্মীরকে ‘পুনর্গঠিত’ করার জন্য বিল আসছে। তাতে ওই রাজ্যকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হবে। তার মধ্যে একটি লাদাখ, অপরটি জম্মু-কাশ্মীর। লাদাখে কোনও বিধানসভা থাকবে না। জম্মু-কাশ্মীরে থাকবে। দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রশাসনের শীর্ষে থাকবেন দু’জন লেফটেন্যান্ট জেনারেল।
অরুণ জেটলির দাবি, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের ভালোর জন্যই রাজ্যকে দু’ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সেখানে আরও বিনিয়োগ হবে, আরও শিল্প হবে, আরও বেসরকারি শিক্ষায়তন গড়ে উঠবে, চাকরির সুযোগ বাড়বে এবং বেশি রাজস্ব আদায় হবে।
৩৭০ ধারা অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান আছে। সেই রাজ্যের সরকার প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ ও বিদেশনীতি বাদে সব বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেখানে কেন্দ্র যদি কোনও পলিসি কার্যকর করতে যায় বা সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে, তাহলেও আগে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়।
জম্মু-কাশ্মীরের রাজনীতিকরা একবাক্যে কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগের নিন্দা করেছেন। গৃহবন্দি অবস্থায় রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা টুইট করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৯৪৭ সালে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ কেন্দ্রকে বিশ্বাস করে ভারতের অন্তর্ভূক্ত হয়েছিলেন। সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা করা হয়নি। এই সিদ্ধান্তের ফল হবে সুদূরপ্রসারী ও বিপজ্জনক।
গৃহবন্দি রাজ্যের অপর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুহতি বলেন, আজ ভারতের গণতন্ত্রের কালো দিন। তিনি টুইট করেছেন, ভারতের অন্তর্ভূক্ত হয়ে জম্মু-কাশ্মীর কী পেয়েছে? আমাদের সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে ভাগ করা হচ্ছে। আমাদের দয়া করে স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস দেওয়া হয়নি। ভারতের সংসদই আমাদের ওই অধিকার দিয়েছিল।