বিল পাশের নিরিখে ১৯৫২ সালের রেকর্ড ভেঙে দিল সপ্তদশ লোকসভা

স্বাধীনতার পর থেকে অল্প সময়ের ব্যবধানে সবথেকে বিল পাশ করিয়ে রেকর্ড গড়ল মোদী সরকার। ১৭ তম লোকসভা চলাকালীন এখনও পর্যন্ত ৩০টি বিল পাশ হয়েছে বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের মতে, এর আগে ১৯৫২ সালে ৬৪ দিনে ২৭টি বিল পাশ হয়েছিল। সেই রেকর্ড ভেঙে, এইবারে সপ্তদশ লোকসভার অধিবেশনে ৩০ টি বিল পাশ হয়েছে যা এককথায় ঐতিহাসিক। এখনও তিন দিন চলবে অধিবেশন। ফলে আরও বিল পাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা বলেন, “দেশের কাজ করার জন্য সংসদই হল একমাত্র জায়গা, তা দেশের মানুষ জানেন। তাই তাঁরা বিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের এখানে পাঠিয়েছেন।” দু’বারের সাংসদ ওম বিড়লা সকাল ৯:৩০ মিনিটে সংসদে আসেন। অধিবেশন শেষ হওয়ার এক ঘন্টা পর সংসদ ত্যাগ করেন। তিনি প্রায়শই মন্ত্রীর সচিবদের সঙ্গে বিভিন্ন বিল নিয়ে আলোচনা করেন এবং সেই বিলগুলি আইনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জনগণের কতটা আশা মেটাতে পারবে, সেই দিকে তিনি সর্বদা নজর রাখেন। এপ্রসঙ্গে বিজেপির এক সাংসদ বলেন, “আমরা এরকমই একজন দক্ষ স্পিকার চেয়েছিলাম, যিনি সর্বদা সংসদের কার্যক্রম থামিয়ে না দিয়ে সচলভাবে পরিচালনা করবেন।”

সংসদে এতোগুলো বিল পাশ করানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যতই উৎসাহ দেখাক, বিরোধীরা কিন্তু তা মানতে চাননি। লোকসভা ভোটের পর অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “আমরা যখন সংসদে আসব, তখন আমাদের শাসক ও বিরোধী সম্পর্ক ভুলে যেতে হবে। আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে কিভাবে দ্রুত দেশের উন্নতি করা যায়।” তবে বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর এই ধারণাকে আলাদা চোখে দেখছেন। তাঁদের মতে, সরকার যেভাবে আরটিআই ও আপা বিল সংশোধন করেছেন, তাতে করে স্পষ্ট বোঝা যায় তাঁরা বিরোধীদেরকে কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন।

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে অনেক বিল পাশ করেছে ঠিকই। কিন্তু বিরোধীদের দাবিকে সম্পুর্ন অগ্রাহ্য করে সংসদের স্থায়ী কমিটিতে কোনো আলোচনা ছাড়াই, পেশী শক্তির প্রয়োগে এতগুলো বিল পাশ করেছে সরকার। রাজ্যসভায় তিন তালাক বিল পাশ হওয়ার পর তিনি একটি চার্ট টুইট করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মাত্র ৫ শতাংশ বিল সরকার সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করেছে। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৪ সালের পর থেকে যা সর্বনিম্ন। এমনকি মোদী সরকারের প্রথমবারে ২৬ শতাংশ বিল সংসদীয় কমিটিতে আলোচনার পর সংসদের উভয় কক্ষে পাশ করানো হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জিরো স্ক্রুটিনি ছাড়াই বিরোধীদের সংখ্যা কম থাকার জন্য সরকার একের পর এক বিল পাশ করে চলেছে। আমরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.