‘আমেরিকাবাসী আমি আসছি’, ফাঁস হয়েছিল লাদেনের ছেলের গোপন চিঠি

লাদেনের সন্ত্রাস-সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী যে একমাত্র হামজাই হতে পারত, সেটা আগেই অনুমান করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। ওসামা বিন লাদেনের সেই ছেলের লেখা একটি চিঠি থেকে আরও স্পষ্ট হয়েছিল। সম্প্রতি, আমেরিকার কয়েকজন আধিকারিক জানিয়েছেন মৃত্যু হয়েছে সেই হামজা বিন লাদেনের।

বছর দশেক আগের একটি চিঠি একসময় প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন গোয়েন্দারা। যেখানে সে তার বাবাকে প্রতিশ্রুতি দেয় যে, বাবার সঙ্গে যা হয়েছে তার প্রতিশোধ সে নেবেই।

২২ বছর বয়সেই সে তার বাবাকে ওই চিঠি লিখেছিল। এক প্রাক্তন এফবিআই কর্তা, যিনি ৯/১১ হামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, তিনিই সম্প্রতি এই চিঠি প্রকাশ্যে আনেন। আলি সউফান নামে ওই গোয়েন্দা ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর চিফ ছিলেন। তাঁর মতে, হামজা যখন ছোট ছিল তখন থেকেই স্থির হয়ে গিয়েছিল যে লাদেনের পরে আল-কায়েদা চালাবে সেইই।

সউফান ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, দীর্ঘদিন বাবার দেখা পায়নি হামজা। সেইসময়ই এই চিঠি লেখে সে। হামজা বাবাকে লেখে, ‘প্রত্যেকটা হাসি, যা তুমি আমাকে উপহার দিয়েছ, প্রত্যেকটা কথা যা তুমি আমাকে বলেছ সব মনে আছে। আল্লার নামে আমি জিহাদের পথ বেছে নিচ্ছি।’

আল-কায়েদার একাধিক প্রচারমূলক ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল হামজাকে। লন্ডন, ওয়াশিংটন, প্যারিসে বারবার হামলার হুমকি দিতে দেখা গিয়েছিল তাকে। বাবার ভাষাতেই কথা বলতে দেখা যায় হামজাকে।

মূলত প্রতিশোধ নেওয়ার কথাই উঠে এসেছিল, হামজার ভাষণে। তার মূল বক্তব্য ছিল, ”আমেরিকাবাসী আমি আসছি। তোমাদের বুঝিয়ে দেব। বাবার সঙ্গে যা করেছ, তার বদলা নেবই।”

লাদেনের মৃত্যুর পর তার পরিবারকে লেখা অনেক চিঠিই প্রকাশ্যে আনা হয়। একটি চিঠিতে দেখা যাচ্ছে, হামজার মাও তাকে বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে উৎসাহিত করছে।

পরে ‘specially designated global terrorist’ তকমা দেওয়া হয় হামজাকে। ওসামাকেও এই তকমা দেওয়া হয়েছিল।

লাদেনের এই ছেলেকে বহুদিন ধরেই খুঁজছে আমেরিকা৷ কখনও জানা যায় যে সে পাকিস্তানে রয়েছে, কখনওবা আফগানিস্তানে৷ কখনও আবার ইরাকে৷ তবে আমেরিকা হাল ছাড়েনি৷ গত বছর শোনা যায়, এই হামজা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জঙ্গি হামলায় অভিযুক্ত মহম্মদ অট্টার মেয়েকে বিয়ে করে৷ আল কায়দা সংগঠনে হামজা কোনও বড়সড় পদেই ছিল বলে অনুমান করা হয়।

চলতি বছরের মার্চ মাসে ১ মিলিয়ন ডলার আর্থিক পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে আমেরিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.