গতকাল চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের নয়া ক্যাম্পাসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অভিযোগগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল প্রশ্ন তোলেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, প্রধানমন্ত্রীর দেখানো পথে হেঁটেই এই সব নিয়োগ করা হয়। আর মমতার এহেন দাবিকে উড়িয়ে দিতেই ‘প্রমাণ’ সহ টুইট বিস্ফোরণ ঘটালেন রাজ্যপাল।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি আমাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন যে প্রয়োজনে বাইরে থেকে লোক নেওয়া যায় কাজ চালানোর জন্য। আপনার কথা মেনেই আমরা এই কাজ করেছি। কিন্তু রাজ্যপাল আমাকে তা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন, কেন আমি এই সব নিয়োগ করেছি। আমার কাছে উনি প্রক্রিয়া জানতে চেয়েছেন। উনি জানেনই না যে প্রধানমন্ত্রী এভাবে করেছেন তাই আমরা তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী এই কাজ করেছি। অফিসার যদি না থাকেন, তাহলে কী করা যাবে? তাই কেন্দ্রের বাতলে দেওয়া পথে হেঁটেই আমরা কাজ করি। আমাদের (কেন্দ্র-রাজ্য) রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি যআই হোক না কেন, যতটা সম্ভব আমরা করি। ৯৯ শতাংশ করি।’ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
আর মমতার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই রাজ্যপাল গতকাল রাতে টুইট করে দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতার দাবি তথ্যগত ভাবে ভুল এবং অনুচিত। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে এরপর বেশ কিছু নথির স্ক্যান কপি পোস্ট করেন। করে লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারা এহেন মিথ্যে তথ্য তুলে ধরার বিষয়টি অপ্রত্যাশিত। এই চিঠিগুলি (পোস্ট করা ছবি) আমি জনসমক্ষে প্রকাশ করছি। রাজ্যপালের তরফ থেকে এই চিঠি লেখা হয়েছে। নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের রিপোর্টের কোনোটিরই সাড়া পাইনি। তাই এই অভিযোগগুলি বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছে।’ উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় হোক কি রাজীব কুমার বা পুলিশ আধিকারিক সুরজিত কর পুরকায়্স্ত, এঁদের সবাইকেই অবসরের পর রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পদে বহাল করা হয়েছে। যা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব ছইলেন রাজ্যপাল ধনখড়। তিনি সেই সব নিয়োগকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে এসেছেন বরাবর। যদিও রাজ্য তাঁর সেই অভিযোগ উড়িয়ে এসেছে।
এমনিতে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের এই ধারা দীর্ধদিনের। রাজ্যপাল হয়ে পশ্চিমবঙ্গে আসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের বিভিন্ন খুঁত ধরিয়ে দিতে শুরু করেন জগদীপ ধনখড়। বারবার রাজ্যপালের মন্তব্য বা কর্মকাণ্ডে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। এই পরিস্থিতিতি পাল্টা তোপ দেগেছেন শাসক দলের নেতারাও। আর এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি নালিশ ঠুকলেন মুখ্যমন্ত্রী।