ছুটি কাটানোর দারুণ ঠিকানা অসমের শৈলশহর হাফলং। ৬৮০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত হাফলং উত্তর কাছার জেলার সদর শহর। হাফলং শব্দটি এসেছে ‘হাঁফলাঁও শব্দটি থেকে। দিমাশি ভাষায় হাঁফলাঁও-এর অর্থ উইয়ের ঢিপি। মূলত পাহাড়িয়া পরিবেশ উপভোগ করতেই পর্যটকরা পাড়ি জমান এখানে। ১০ কিলোমিটার দূরেই জাটিঙ্গা।
শিয়ালদহ থেকে ভোরবেলার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে চেপে পরদিন দুপুরে নিউ হাফলং স্টেশনে নামুন। স্টেশনে দাঁড়িয়েই দেখা যায় অল্প দূরের পাহাড়ে মেঘের লুকোচুরি। আনারস, কমলালেবু, নাশপাতি ইত্যাদি ফল এখানে সুলভে মেলে। বাহারি ফুলও চোখে পড়ে হাফলঙে গেলে। শহরের হৃৎপিণ্ডে অবস্থিত একটি চার্চ। সেখানে প্রার্থনা করতে আসেন অনেকে। জায়গাটিতে গেলে মনে আসে প্রশান্তি।
হাফলঙে রয়েছে একটি নয়নাভিরাম হ্রদ। হ্রদের জলে বোটিং করা যায়। ঘুরে দেখুন হাফলং ম্যাল। এখানে বসে অনেকটা সময় কাটিয়ে দেওয়া যায় অনায়াসে। প্যারাগ্লাইডিঙের ব্যবস্থাও রয়েছে। হাফলং থেকে সহজেই যাওয়া যায় ৪৫ কিলোমিটার দূরের মাইবঙে। সপ্তদশ শতকে এখানে গড়ে উঠেছিল দিমশা কাছারি বংশের রাজধানী। জায়গাটি বেশ শিল্প-সংস্কৃতি পরিবেষ্টিত।
হাফলঙে বেড়াতে গেলে অবশ্যই ঘুরে আসবেন জাটিঙ্গা। জাটিঙ্গায় সন্ধ্যা নামলে এক বিস্ময়কর দৃশ্য দেখা যায়। অন্ধকারে আগুন জ্বালালে শত শত পাখি এসে আত্মাহুতি দেয়। এ দৃশ্য দেখার জন্যই জাটিঙ্গায় রাত কাটান বহু পর্যটক। কিন্তু বর্তমানে সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
রয়েছে পানিমুর জলপ্রপাত। বয়ে চলা কপিলি নদীটিও দেখতে দারুণ। এই নদীর জল কোথাও সবুজ আবার কোথাও নীল– জলের এমন বৈচিত্র পর্যটকদের মুগ্ধ করে। শহরটিতে বোড়ো, কাছারি, নাগা, কার্বি, খাসি, দিমাসা সম্প্রদায়ের মানুষজন বসবাস করে। হাফলং বেড়ানোর পিক টাইম অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। হাফলঙে গড়ে উঠেছে ছোট বড় নানা মানের হোটেল। আগে থাকে বুক করা থাকলে ভালো। তাহলে আর দেরি কেন? আজই টিকিট কেটে ফেলুন!