তৃণমূলের তালিকা প্রকাশের পর থেকেই সমস্যা প্রকট হয়েছে। শুরু হয়েছে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ক্ষোভ। শুধু ক্ষোভ নয়, টিকিট না পাওয়া প্রাক্তন কাউন্সিলরদের নির্দল প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন তোলার হিড়িক। এমনটাই ছবি দেখা গেল আসানসোলে। প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র, চারজন মেয়র পারিষদ, তিনজন বোরো চেয়ারম্যান সহ ৪০ জনেরও বেশি প্রাক্তন কাউন্সিলর।
আর এর পর থেকেই শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। টিকিট না পাওয়া নেতাদের অনুগামীরা অনেক জায়গাতেই পার্টি অফিস থেকে দলীয় ঝাণ্ডা খুলে দিয়েছেন। কেউ আবার নেতাদের সমর্থনে মিছিল শুরু করে দিয়েছেন। টিকিট না পাওয়া কাউন্সিলররা নির্দল হয়ে দাঁড়াতে মনোনয়ন তোলা শুরু করেছেন।
আবেগ তাড়িত হয়ে কারও চোখে জল। ভারাকান্ত মন নিয়েই নির্দল হয়ে দাঁড়াতে চান তাঁরা। তাঁদের দাবি, সারা বছর উন্নয়নের কাজ করেছেন। কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে থেকেছেন। দলের অনুশাসন মেনে কাজ করে গেছেন। কিন্তু সদ্য বাইরে থেকে আসা বহিরাগতদের টিকিট দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবার। এই অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।
বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতায় দলীয় বৈঠকের পর ১০৬ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। সেই তালিকায় দেখা যায় বাদ পড়েছেন প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তাবাসুম আরা, জল দফতরের মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায়, সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মেয়র পারিষদ মীর হাসিম, নিকাশি দফতরের মেয়র পারিষদ লক্ষণ ঠাকুর, শিক্ষা দফতরের মেয়র পারিষদ অঞ্জনা শর্মা, প্রাক্তন বোরো চেয়ারম্যান গুলাম সরোবর । বহু কাউন্সিলরের সঙ্গে বাদ পড়েছেন তৃণমূল মহিলা মোর্চার জেলা নেত্রী আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এবার প্রার্থী করা হয়েছে পূর্বতন কুলটি পুরসভার চারবারের চেয়ারম্যান, তিনবারের বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে। মন্ত্রী মলয় ঘটকের ভাই তথা আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক গতবারের মত এবারও প্রার্থী হয়েছেন। নতুন যাঁরা টিকিট পেলেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র।
পুরপ্রশাসক মণ্ডলীর বর্তমান ভাইস চেয়ারপার্সন বিবি কলেজের প্রিন্সিপল ডক্টর অমিতাভ বসু, বিজেপি থেকে আসা চিকিৎসক দেবাশিস সরকার টিকিট পেয়েছেন। এছাড়া সদ্য তৃণমূলে যোগদান করেই প্রার্থী হয়ে গেলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেত্রী ইন্দ্রাণী মিশ্র ও প্রাক্তন সিপিআই কাউন্সিলর কবিতা যাদব।
শুধু ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ক্ষোভ বিক্ষোভ নয়, দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ও টিম পিকের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট। নেতা কর্মীরা সরাসরি অভিযোগ করেছেন টাকা পয়সার বিনিময়ে প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে। টিম পিকে টাকা পয়সা নিয়ে ভুল তথ্য পাঠিয়েছি রাজ্যে। তাই প্রার্থী বদল হয়ে গেছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কর্মীদের। তবে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি দলটা বড়। অনেকের প্রত্যাশা থাকে। এইসব ক্ষোভ বিক্ষোভ সাময়িক।