আগামি বছরের শুরুতেই পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই চণ্ডীগঢ়ের মসনদ দখল নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে লড়াই চলছে। একের পর টানটান ঘটনায় পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচন যেন কোনও সিনেমার চিত্রনাট্য। কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে মনমালিন্যের পর নাটকীয়ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। তারপরই পঞ্জাব লোক কংগ্রেস নামে নতুন দল গঠন বিজেপির সঙ্গে জোটের বার্তা দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন। শুক্রবার সম্ভাবনা সত্যি করেই বিজেপির সঙ্গে জোটের কথা ঘোষণা করলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর। এদিন বিজেপির তরফে পঞ্জাবের পর্যবেক্ষক তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শিখাওয়াতের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর ক্যাপ্টেন অমরিন্দর বলেন, “আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। নির্বাচনে আমরাই জিততে চলেছি। আসন ধরে ধরে আলোচনার পর প্রার্থী নির্বাচন ও আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত হবে। জেতার সম্ভাবনার ভিত্তিতেই ঠিক হবে প্রার্থী তালিকা। আমারা ১০১ শতাংশ নিশ্চিত নির্বাচনে আমরাই জিতব।”
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শিখাওয়াত জানিয়েছেন, “দীর্ঘ ৭ দফা আলোচনার পর, আজ আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আগামি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ও পঞ্জাব লোক কংগ্রেস জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়াই করবে। আসন বন্টনের মত বিষয়গুলি নিয়ে পরে আলোচনা হবে।” চলতি মাসের ৭ তারিখেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা পঞ্জাব বিজেপির ইনচার্জ শিখাওয়াতের সঙ্গে দেখা করেছিলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর। অমরিন্দরের বাড়িতেই হয়েছিল এই বৈঠক। জানা গিয়েছিল বৈঠকে সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিজেপির শীর্ষনেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই জানিয়েছিলেন, অমরিন্দর সিং ও পঞ্জাবের আগের শাসক তথা বিজেপির প্রাক্তন জোটসঙ্গী শিরোমণি অকালি দলের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে। দুই দলের সঙ্গেই জোটের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন অমিত শাহ।
সেপ্টেম্বর মাসেই পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধুর সঙ্গে কোন্দলে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর। সেই সঙ্গে কংগ্রেস ত্যাগের কথাও ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ইঙ্গিত ছিলই তিনি নতুন দল করবেন। সেই মতো পঞ্জাব লোক কংগ্রেস নামক দল তৈরি করেন। রাজনৈতিক মহলের মতে বিজেপির সঙ্গে জোটের বিষয়টি ঠিক হয়ে থাকলেও কৃষক আন্দোলনের কারণে তা ঘোষণা করা সম্ভব ছিল না। কারণ কৃষক আন্দোলনে অংশগ্রহন কারী কৃষকদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল পঞ্জাবের। গুরু নানক জন্ম জয়ন্তীর দিন কৃষি আইন বাতিলের কথা ঘোষাণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপরই সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনেই নিয়মমাফিক প্রত্যাহার করা হয়েছিল কৃষি আইন। তাই বিজেপির সঙ্গে জোটে কোনও সমস্যা নেই আন্দাজ করেই আনুষ্ঠানিকভাবে এই জোট ঘোষণা করা হল বলেই মনে করা হচ্ছে।