‘নবান্ন ঘেরাও হবে, নবান্নের ১৪ তলা অবধি কিষাণ মার্চ হবে’, সিঙ্গুর থেকে বড়ো ঘোষণা বিজেপির রাজ্য সভাপতির।

সিঙ্গুর থেকেই নবান্ন অভিযানের কথা ঘোষণা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বৃহস্পতিবার রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান, ২২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ব্লকে ব্লকে বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখাবে কিষাণ মোর্চা। ৫ থেকে ১০ জানুয়ারি জেলায় জেলায় কিষাণ মার্চের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। ১০ জানুয়ারির মঞ্চ থেকেই নবান্ন অভিযানের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে পদ্মশিবির।

এদিন সুকান্ত মজুমদার বলেন, “২২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে প্রতিটি ব্লকে আমরা বিডিওর কাছে কিষাণ মোর্চার নেতৃত্বে ডেপুটেশন দেব। যখন বিডিওর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেবেন, বিডিওর সামনেই সেই সময় শঙ্খ বাজাবেন। ৫ থেকে ১০ জানুয়ারি জেলায় জেলায় কিষাণ মার্চ হবে। আমরা ১০ তারিখের মঞ্চ থেকে নবান্ন অভিযানের দিন ঘোষণা করব। নবান্ন অবধি পদযাত্রা করব। নবান্ন ঘেরাও হবে, নবান্নের ১৪ তলা পর্যন্ত কিসান মার্চ হবে। সেদিন আমরা তিলের নাড়ু মুখে দিয়ে নবান্নের উদ্দেশে অভিযান করব। হীরক রানিকে তাঁর চেয়ার থেকে টেনে নামাব। আর বোঝাব যে কৃষকদের দাবি মানতে হবে।”

সূত্রের খবর, ২২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর সাত দফা দাবিতে বিডিওর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। শঙ্খনাদে বিডিওর হাতে সেই ডেপুটেশন হাতে তুলে দেবেন কিষাণ মোর্চার সদস্যরা। ৫ জানুয়ারি থেকে জেলায় জেলায় পাঁচদিনে কিষাণ মার্চ হবে। সেখানে এক এক জায়গায় থাকবেন বিজেপির এক এক রাজ্য স্তরের শীর্ষ নেতা। ঘাটাল, বর্ধমান ও আরামবাগে থাকার কথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের।

১০ জানুয়ারি জলপাইগুড়িতে থাকার কথা সুকান্ত মজুমদারের। শুভেন্দু অধিকারী থাকতে পারেন মালদহে। এদিনই ঘোষণা করা হবে কবে নবান্ন অভিযান করবেন তাঁরা। কৃষকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়াকে সামনে রেখে মঙ্গলবার থেকে তিনদিন ব্যাপী ধরনায় বসে বিজেপি। জমি আন্দোলনের প্রাণভূমি সিঙ্গুরে বৃহস্পতিবারই ছিল ধরনা কর্মসূচির শেষদিন। এখান থেকেই আগামীর রোডম্যাপ তৈরি করে দেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

শুভেন্দু অধিকারী এদিন তৃণমূলকে তোলামূল ও তৃণমূলের বিধায়কদের কাটমানির বিধায়ক বলে কটাক্ষ করে বলেন, “নবান্নের ১৪ তলায় যিনি বসে আছেন, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি চালান। তিনি ভাইপোকে এনে এই রাজ্যপাট তুলে দিতে চান। তাঁর ভাইয়ের বউ আবার সমাজসেবা করে পাঁচ কোটি টাকা করেছেন। কৃষকদের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করিয়ে আমার ছাড়ব। যদি ভোট লুঠ করা হয়, গোটা রাজ্যে রাস্তার উপরে বসে পড়তে হবে।”

২০০৬ সালে সিঙ্গুরের মতো একটা শান্ত গ্রাম রাতারাতি বদলে গিয়েছিল প্রতিবাদের অগ্নিক্ষেত্রে। সে সময় লড়াইটা ছিল শিল্প বনাম কৃষির। সেই লড়াইয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গায়ের জোরে সরকারের বহুফসলি জমিঅধিগ্রহণ কার্যত রুখে দিতে পেরেছিলেন তত্‍কালীন তৃণমূল নেত্রী। দৃষ্টান্ত তৈরিতে সক্ষম হয়েছিল সিঙ্গুর। কিন্তু কী পেয়েছেন কৃষকরা? বিজেপি বলছে, না পেয়েছেন শিল্পনগরী, না পেয়েছেন বহুফসলি জমি। কোনওরকমে বেঁচে রয়েছেন তাঁরা। সে কারণেই কৃষক স্বার্থে তাদের ময়দানে নামা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.