বুধবার কেন্দ্রীয় ৭৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র আওতায় সেমিকন্ডাক্টর তৈরি জন্যই এই বিপুল অঙ্কের প্রকল্পকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। পাশাপাশি দেশকে ইলেকট্রনিক হাবে পরিণত করার লক্ষ্যমাত্রাও নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। লক্ষ্যপূরণে এই পদক্ষেপ ইতিবাচক বলেই মনে করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পের অধীনে আগামি ৬ বছরে দেশজুড়ে ২০ টি সেমিকন্ডাক্টর ডিজাইন, সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে প্রয়োজনীয় উপাদানের উৎপাদন, ডিসপ্লে ফ্যাবরিকেশন ইউনিট তৈরি করা হবে। বিশ্বব্যাপি সেমিকন্ডাক্টরের অপ্রতুলতার মধ্যে যখন অনের শিল্পে উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, সেই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ইতিবাচক বলেই মনে করা হচ্ছে।
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন সরকার তিন রকমভাবে সেমিকন্ডাক্টার উৎপাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমত, কমপাউন্ড সেমিকন্ডাক্টর ওয়েফার ফ্যাব্রিকেশন ইউনিট তৈরির জন্য মোট বিনিয়োগ করা মূলধনের ওপর ২৫ শতাংশ ইনসেন্টিভ দেবে সরকার। দ্বিতীয়ত, যেসমস্ত স্টার্ট আপ সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন করবে, তাদেরকেও ইনসেন্টিভ দেওয়া হবে। তৃতীয়ত, প্রস্তাবিত প্রকল্প খাতে ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের সেমিকন্ডাক্টর ডিসপ্লেগুলির জন্য দুটি ফ্যাব ইউনিট স্থাপন করার পরিকল্পনা ছিল এবং ডিজাইন ও উৎপাদনের জন্য ১০ টি ইউনিট খোলার পরিকল্পনা ছিল। মনে করা হচ্ছে এই পিএলআই প্রকল্প ভারতের উৎপাদন ভিত্তিকে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।
মন্ত্রিসভার প্রকল্পটি অনুমোদন করার, ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক বিস্তারিত খসড়া তৈরি করবে। প্রচুর পরিমাণে ইনসেন্টিভ দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার মিডিয়াটেক, ইন্টেল, কোয়ালকম, স্যামসাং এবং টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টের মতো শীর্ষ সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতাদের আকৃষ্ট করার পরিকল্পনা করছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, চিপ আর সেমিকন্ডাক্টরের অভাব ২০২২ এর জুন মাস পর্যন্ত চলতে পারে। করোনাকালে চিপ আর সেমিনকন্ডাক্টরের উৎপাদনও দারুণভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। এই দুটি জিনিসই গাড়িতে ব্যবহৃত হয়। ফলে গাড়ির উৎপাদনও প্রভাবিত হয়েছে। চিপ আর সেমি কন্ডাক্টরের ব্যবহার শুধু গাড়িতেই নয়, বরং স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, টেলিভিশন আর রেফ্রিজারেটরেও হয়। অর্থাৎ চিপের অভাবের প্রভাব এই সমস্ত পণ্যের উপরও পড়তে পারে। সম্ভবত, এটাই কারণ যে সাম্প্রতিক কালে নতুন স্মার্টফোনের লঞ্চ কমই হয়েছে।