১৪ ডিসেম্বরে, অনেক হিন্দু বুদ্ধিজীবী পাকিস্তানী হানাদারদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হন। সময়টা ছিল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কাল।
তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড: গোবিন্দ চন্দ্র দেব (দর্শন), জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা (ইংরেজি ), সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য্য (ইতিহাস), রাজশাহী বিশ্বনবিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুখরঞ্জন সমাদ্দার (সংস্কৃত), রাজনীতিবিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, মানবতাবাদী রণদাপ্রসাদ সাহা এবং তাঁর ছেলে ভবানী প্রাসাদ সাহা।
বিবিসি বাংলায় “গোল্ডেন জুবিলী অফ ইনডিপেনডেন্স: স্টোরি অফ আ ফ্যামিলি ফোর্সড টু কনভার্ট ইন ১৯৭১” প্রতিবেদনে এমন সব লোকের কথা উল্লেখ করে যাঁদেরকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়। .
শচীন্দ্র চান্দ্রা আইচের পরিবারের এই পরিস্থিতির শিকার হতে হয়।
ইংরেজির শিক্ষক শচীন্দ্র যিনি শচিন স্যার ময়মনসিংহ জেলায় হিসেবে পরিচিত ছিলেন বিবিসি বাংলাকে জানান ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ হিন্দুদের উপর ব্যাপক হিংসা শুরু হয়।
তাঁর কলেজের প্রিন্সিপাল বলেন, “আপনি কিভাবে কলেজে আসবেন? পশ্চিম পাকিস্তানীরা হিন্দুদের সহ্য করে না।”
“অনন্যোপায় হয়ে আমি পরিবারসহ মসজিদে গিয়ে প্রাণ ও ইজ্জত বাঁচাতে মুসলমান হয়ে যাই। তারপর কলেজের চাকরি বাঁচায়,” আইচ জানান।
তাঁর বোন কানন বলেন , “আমাদের প্রচীনদ চাপে ফেলে মুসলমান বানানো হয়”।
পাকিস্তানী হানাদাররা আমাদের এক আত্মীয়কে বলে, ‘বাঁচতে চাইলে মুসলমান হয়ে যাও। আমার ভায়েরা চাকরি বাঁচাতে পারতো না , না খেয়ে মরতে হতো যদি না মুসলমান না হতো। আমরা বহু ম্যাশ কার্যত গৃহবন্দী ছিলাম” কানন বলেন।
তিনি আরো বলেন,” রমজানের সময় মুসলিম মহিলারা দলে দলে আমাদের বাড়িতে হানা দিতো, রান্না ঘর উনুন উলট পালট করে দিতো। জানতে চাইতো কেন আমরা রোজা রাখছি না?”
পাকিস্তানি হানাদারদের দ্বারা মুক্তিযুদ্ধের কালে যা শুরু হয়েছিল, স্বাধীনতার পরে তারই পুনরাবৃত্তি হয়ে চলেছে, সেকাল ও একালের হিন্দুরা একই অবস্থায় আছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে ভাগ্য বদলায় নি।