রাজ্যের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় চিকিৎসা পাচ্ছেন অনেকেই। বিনামূল্যে সরকারি ও বেসরকারি উভয় হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া যায় রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে থাকলে। কিন্তু সেই কার্ডে চিকিৎসা দেওয়ার পর পর টাকা পাচ্ছে না হাসপাতালগুলি। রাজ্য সরকারের কাছে বেসরকারি হাসপাতালের বাকি কয়েক কোটি টাকা। এভাবে চলতে থাকলে কতদিন স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতায় বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে, তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো।
সম্প্রতি শহরের বেশ কয়েকটি নামী হাসপাতাল থেকে এমনই অভিযোগ সামনে এসেছে। শহরের তিনটি কর্পোরেট হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা দেওয়ার পর রাজ্য সরকারের কাছ থেকে টাকা পায়নি তারা। ৪৫ দিনের বেশি অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও কয়েক কোটি টাকা পাওনা রয়ে গিয়েছে সরকারের কাছে। অভিযোগ জানিয়েছে মূলত তিনটি হাসপাতাল। আমরি হাসপাতালের সরকারের কাছে পাওনা রয়েছে ১৫ কোটি টাকা। মুকুন্দপুর, ঢাকুরিয়া ও সল্টলেক তিন জায়গায় হাসপাতাল রয়েছে এই গ্রুপের। মেডিকা হাসপাতাল রয়েছে মুকুন্দপুরে। মেডিকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি ১০ কোটি টাকা বাকি আছে তাদের। একই অভিযোগ আরএন টেগোর হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের দুটি শাখা মিলিয়ে তাদেরও বাকি প্রায় ১০ কোটি টাকা।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রত্যেকটি বেসরকারি হাসপাতালকে তাদের মোট শয্যার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেড়ে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতায় ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা করাতে হয়। এমনটাই দাবি করেছিল এই হাসপাতালগুলোর। শুধু তাই নয়, নির্ধারিত বেডের বাইরে বেশ কিছু নন কোভিড বেডেও স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর চিকিৎসা করানো হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। কিন্তু সেই চিকিৎসার টাকা তারা পায়নি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে। তাই ওইসব হাসপাতাল এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্ধারিত বেডের বাইরে আর স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতায় চিকিৎসা দেবে না তারা।
বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া জানান, রাজ্য সরকারের তরফে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বকেয়া টাকা দিয়ে দেওয়া হবে, কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে ৪৫ থেকে ৬০ দিন পেরিয়ে গেলেও সেই বকেয়া টাকা পায়নি হাসপাতালগুলি। এখনও পর্যন্ত রোগী ফেরানো না হলেও, ভবিষ্যতে এভাবে চলতে থাকলে কতটা চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।