সীমান্তে চিন হোক বা সেনার অন্দরে দুর্নীতি,সবার বিরুদ্ধে লড়েছিলেন জেনারেল রাওয়াত

১৯৮৭ সালে অরুণাচলপ্রদেশ বা ২০১৭ সালে ডোকলাম, চিনের মুখোমুখি হতে কখনও ভীত হননি চিফ এফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত। আবার সেনার অন্দরেও দুর্নীতি মেটাতে পিছপা হননি জেনারেল রাওয়াত। সেনা আবাসনের নির্মাণে দুর্নীতির ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ থেকে শুরু করে ক্যান্টিনে শুধু ভারতীয় সামগ্রী বিক্রির নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিগত চার দশক ধরে ব্রিগেডিয়ার কম্যান্ডার, সাউদার্ন কম্যান্ডের জেনারেল অফিসার কম্যান্ডিং ইন-চিফ, কর্নেল মিলিটারি সেক্রেটারি, ডেপুটি মিলিটারি সেক্রেটারি-সহ একাধিক পদ সামলেছেন বিপিন রাওয়াত৷ দেশভক্তির সঙ্গে তাঁর মধ্যে নৈতিকতা এবং সততা ছিল প্রথম থেকেই।

ভারতের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ হিসাবে তিনি মিরাটে এবং দিল্লির সালারিয়ার দুটি প্রকল্পে দুর্নীতির সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন সেনাবাহিনীকে। এর মধ্যে সালারিয়ার প্রকল্পটি মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের তৈরি করা। এই দুই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল ঝথাক্রমে ৬,০৩৩ কোটি ও ১৩,৬৮২ কোটি টাকা। জেনারেল রাওয়াত নিম্নমানের নির্মাণের জন্য মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের শীর্ষ আধিকারিকদের তিরস্কার করেছিলেন এবং তাঁদের বলেছিলেন যে সালারিয়া এনক্লেভ বিধ্বস্ত সিরিয়ার মতো দেখতে।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ

এদিকে সেনার অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকরা জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে অপছন্দ করতেন। বিপিন রাওয়াত সেনার ক্যান্টিনে কেনাকাটির ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। তিনি জানতে পেরেছিলেন যে কর ফআঁকি দিতে বিএমডাব্লুর মতো দামী ব্র্যান্ডের গাড়ি ক্যান্টিনের মাধ্যমে কিনতেন অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকরা। এই কারণে প্রথমে তিনি প্রথমে ক্যান্টিনে কেনাকাটির ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছিলেন ১২ লক্ষ টাকায়। পরে ক্যান্টিনে শুধউমাত্র ভারতীয় সামগ্রী বিক্রি চালু করেন। অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকদের প্রতি বিপিন রাওয়াতের বক্তব্য ছিল যে বিএমডাব্লু বা বিদেশি মদ কেনার মতো এত টাকা থাকলে করও দিতে পারবেন, তাই ক্যান্টিন থেকে এই জিনিস না কিনে বাজার থেকে কিনুন। অবসরপ্রাপ্তদের ক্রোধ হাসি মুখেই সামলেছিলেন জেনারেল রাওয়াত। তবে ৬৩ বছরেই চিরতরে হারিয়ে গেল এই হাসি৷ তবে তাঁর সাহসিকতা ও নৈতিকতার গাঁথা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.