পুলিশের রাজনীতিকরণের একটি দলিল নীচে দিলাম ।
নোটিশ টি জারি হয়েছে আজ ৮.১২.২০২১ এ । নীচে সই করেছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ ( ওয়েলফেয়ার ) ।
কি লিখেছেন তাতে ?
ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড স্পোর্টস সোসাইটির নামে মাসের মাইনে থেকে অ্যাডভান্স কেটে নেওয়া হবে subscription of membership । পাশে উল্লেখিত কাকে কোন পদ মর্যাদায় কত কাটা হবে মাইনে থেকে । যেমন DG P / ADG / IGP/ SPL / CP দের মাস মাইনে থেকে কাটা হবে ৩৫০ টাকা করে । অর্থাৎ ২০২২ এর জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ৩৫০×৬ = ২১০০ টাকা কেটে নেওয়া হবে । এভাবে পুলিশের বিভিন্ন স্তরে সব কর্মচারীদের কাছ থেকে rank অনুযায়ী ৩০০, ২০০, ১৫০,১০০ করে কাটা হবে । সর্বনিম্ন কনস্টেবলদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে মাসে ।
এটা কি সরকারি নোটিশ ? প্রশ্ন করেছিলাম কলকাতা পুলিশের খুব সিনিয়র সেই আই পি এসকে যাঁর কাছ থেকে প্রায়শই খবর সংগ্রহ করি । উত্তর যা দিলেন
- হ্যাঁ কিন্তু না । মানে ? যা বললেন তার মানে দাঁড়ায় – পুলিশ ইউনিয়ন তুলে দিয়ে পুলিশ ওয়েলফেয়ার বোর্ড করে এই করবার চলছে বেশ কয়েক বছর । জনৈক কালীঘাট থানার ওসি সিনহা বিশ্বাসকে দিয়ে এই কাজ বছরের পর বছর করান সি এম । কেউ কিছু বলার নেই ।
নামে ওয়েলফেয়ার বোর্ড । আসলে তৃণমূলের একটি শাখা সংগঠন এটি । পুলিশের আমরা সবাই জানি এটা । চটাই না । কে কে ওয়েলফেয়ার বোর্ডের নামে এই ধ্যস্টামি পছন্দ করিনা তার মাসিক রিপোর্ট চলে যায় সি এমের কাছে । মুখ বুজে পুলিশের ৯০ শতাংশ স্টাফ মেনে নেয় সব কিছু । ওয়েলফেয়ার বোর্ডের অবাধ্য হলেই ট্রান্সফার । কাকদ্বীপ থেকে কুচবিহার । ওয়েলফেয়ার বোর্ডের মাতব্বরি করেন যারা কাজ করতে হয় না তাদের । এই দুই শতাংশ মাতব্বর এখন পুলিশের সব কিছুর নিয়ন্ত্রক । এরা সরাসরি সি এমের কানে তোলে সব । রাজ্য পুলিশের অধিকাংশ স্টাফ মুখ বুজে মেনে নিচ্ছে সব । কেউ পছন্দ করেনা এদের । তবু এরাই ঠিক করে কোন থানায় কে যাবে । কে কোন জেলায় পোস্টিং পাবে । সি এমেরর স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স এরাই ।
ভোটের সময় এদের দিয়েই পোস্টাল ব্যালট নিয়ন্ত্রণ করে শাসক দল । এমন কোন রাজনৈতিক, অনৈতিক কাজ নেই যা এদের দিয়ে করানো হয়না । থানা গুলোতে ঘুরে শাসক দলের ভোট যোগাড় করানোর কাজটা এরাই করে । কোন বিরোধী নেতাকে কিভাবে টাইট দেওয়ানো যায় তার ব্লুপ্রিন্ট এদের দিয়েই করানো হয় ।
গত দশ বছর ধরে এইভাবেই চলছে রাজ্য পুলিশ । রা কাড়লে পানিশমেন্ট পোস্টিং ।
এই পর্যন্ত বলে থামলেন এই পুলিশ কর্তা । বললেন সাক্ষাতে বাকিটা বলব । বললাম – আর বাকি কি থাকতে পারে ? উত্তর – শুনলে আপনার অবিশ্বাস্য মনে হবে । যখন শুনবেন, তখন মিলিয়ে নেবেন ।
ভাবছিলাম রাজ্যে সর্বগ্রাসী এক দলীয় শাসন কায়েম রাখতে যা যা করার সবই করেছেন মমতা । কিন্তু আই পি এস থেকে হাবিলদারকে চাপরাশিতে পরিণত করার আর্টটা বোধ হয় অধরাই ছিল বাম আমলে, যেটা শেষ পর্যন্ত করে দেখালেন মমতা ।
নীচের নোটিশের বয়ানটা ভালো ভাবে পড়ুন । নির্দেশটা কোন লেভেলের বুঝে যাবেন ।
কপাল বটে পুলিশ কর্মচারীদের !!
সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় (৯৮৩০৪২৬০৭৮)