দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার পরেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনঢ় বিক্ষুব্ধরা।

দলের হুঁশিয়ারির পরেও নির্বাচনে লড়ছেন কলকাতা পৌরনিগমের ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। কিন্তু প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করেননি সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। একই রকমভাবে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়ও। দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার পরেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনঢ় নির্দল প্রার্থী।

৭২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ২০১৬ সাল থেকে আমি তৃণমূলের সদস্য নই। আমার সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। সুতরাং বহিষ্কারের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এই পরিস্থিতিতে আমি কোনওমতেই পিছপা হব না। নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে ববি হাকিম, দেবাশিস কুমার-সহ তৃণমূলের অনেককেই জানিয়েছিলাম। তবে আমি এখনও নিজেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক বলেই মনে করি।”

এদিকে একরাশ ক্ষোভ জমে রয়েছে প্রয়াত তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তথা কলকাতা পৌরনিগমের ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী তনিমা চট্টোপাধ্যায়ের মনেও। আজ তাঁর সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী নির্দেশ দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। কিন্তু নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার কোনও চিন্তাভাবনা যে তাঁর নেই, সেই কথাও আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন। ভবিষ্যতে তৃণমূলে থাকবেন কি না সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, “আগে বর্তমানের সমস্যাটা মেটাই, তারপর ভবিষ্যতের কথা ভাবা যাবে। আমি আগেও বলেছি, আমি তৃণমূলেই আছি, তৃণমূলেই ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও তৃণমূলেই থাকব। এই যে একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠান হবে। আমি কি যাব না? দল ডাকুক বা না ডাকুক, আমি তো যাব।”

তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল দলের বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থীদের যে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, তাতে খুব একটা আমল দিচ্ছেন না সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন। বললেন,”বহিষ্কার করে দিতেই পারে। আমজনতাকে তো ঠেকাতে পারবে না।

তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই প্রার্থীপদ নিয়ে বেশকিছু দ্বন্দ্ব চোখে পড়েছে। কোথাও কোথাও টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশ করেছেন অনেকে। তাঁদের অবিলম্বে প্রার্থী পদ প্রত্যাহার না করলে বহিষ্কার করা হতে পারে বলেও বার্তা দেওয়া হয়েছে। নতুন-পুরনো নিয়ে যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে অনেক ওয়ার্ডে, সেই বিষয়েও আলোকপাত করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও বিষয়ে যেন সামনে না আসে, সেই বার্তা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তারপরেও তুষের আগুনের মতো ধিক ধিক করে জ্বলেই যাচ্ছে চাপা অসন্তোষ। এই পরিস্থিতিতে এই নির্দল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আগামী দিনে দল কোনও কড়া পদক্ষেপ করে কি না, সেই দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.