মমতার পাড়াতে প্রার্থী হচ্ছেন মমতার ভ্রাতৃবধূ কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায়, তাই নির্দল প্রার্থী হচ্ছেন বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর।

মনোনয়ন জমার শেষ দিনে একের পর এক অস্বস্তি তৃণমূলের। দলের প্রতীকে টিকিট না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তৃণমূলেরই একাংশ। নির্দল প্রার্থী হচ্ছেন। আর সেই ‘বিদ্রোহে’র আঁচ এবার গিয়ে পড়েছে একেবারে মমতার পাড়ায়। আসন্ন কলকাতা পৌরনিগম নির্বাচনে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হচ্ছেন মমতার ভ্রাতৃবধূ কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার জন্য ‘বলি’ দিতে হয়েছে বিদায়ী কাউন্সিলর রতন মালাকারকে। দলের তরফে ‘অবহেলা’-র অভিযোগ তুলে তিনিও এবার নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়াতে চাইছেন।

কলকাতা পৌরনিগমের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে তিন বার জিতেছেন রতন মালাকার। কিন্তু তারপরেও এবার রতন মালাকারকে টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত, বেজায় চটে রয়েছেন বিদায়ী কাউন্সিলর। ইতিমধ্যেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন, নির্দল প্রার্থী হিসেবেই পৌর নির্বাচন প্রতিদ্বন্বিতা করবেন তিনি। ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রতন মালাকার।

তিন বার দলকে জেতানোর পরেও কেন তাঁকে টিকিট দেওয়া হল না, সেই নিয়ে ইতিমধ্য়েই তিনি প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। শুধুমাত্র দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্ত্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায়কে জায়গা করে দেওয়ার জন্যই কি প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ গেল তাঁর নাম? প্রশ্নগুলি ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। স্বাভাবিকভাবেই একেবারে মমতার পাড়ায় এই কোন্দলের জেরে অস্বস্তি আরও বাড়ছে দলের শীর্ষ  নেতৃত্বের।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর সে ভাবে পরিবারের অন্য সদস্যদের সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। পরে উত্থান হয়েছে ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রথমে সাংসদ হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন তিনি। আর বর্তমানে তিনি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। একুশের নির্বাচনে দলের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পরিবারতন্ত্রের নানা কথা বলে তৃণমূলকে বারবার বিঁধেছে বিজেপি নেতৃত্ব। এবার ফের আরও এক সদস্যের রাজনীতিতে পদার্পণ। আর মমতার ভ্রাতৃবধূকে এবার রাজনীতির আঙিনায় জায়গা করে দিতে গিয়ে খোদ মমতার নিজের ওয়ার্ডেও কোন্দল ছড়িয়েছে।

শুধু কাজরীই নয়। প্রার্থী তালিকায় বেশ কয়েকটি নাম থেকেই স্পষ্ট যে পরিবারতন্ত্রকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ঘাসফুল শিবিরে। তালিকায় রয়েছেন শশী পাঁজার মেয়ে পূজা পাঁজা, প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা মুখোপাধ্যায়। টিকিট পেয়েছেন, স্বর্ণকমল সাহা-র ছেলে সন্দীপন সাহা, শান্তনু সেনের স্ত্রী কাকলি সেন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছেলে সৌরভ ভট্টাচার্য, তারক সিং-এর ছেলে অমিত সিং ও মেয়ে কৃষ্ণা সিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.